July 3, 2025
Neha

বর্তমানে ফোন ছাড়া, সোশ্যাল মিডিয়া ছাড়া কয়েক মুহূর্ত থাকা সম্ভব নয়। সেখানে তিন বছর ছিলেন সেসব ছাড়া। আর তাতেই মিলল সাফল্য। ইউপিএসসি পাশ করে আজ তিনি একজন সফল আইএএস। তাঁর সাফল্যের শিখরে ওঠার গল্প অনুপ্রেরণা যোগাবে সকলকে।

তিনি নেহা ব্যাডওয়াল।২০২১ সালে চতুর্থবার তিনি ইউপিএসসি পরীক্ষা দেন এবং মাত্র ২৪ বছর বয়সে তিনি উত্তীর্ণ হন। তাঁর সর্বভারতীয় স্তরে র‍্যাঙ্ক ছিল ৫৬৯। তাঁর প্রাপ্ত নম্বর ছিল ৯৬০। এরমধ্যে তিনি ইন্টারভিউতে পেয়েছিলেন ১৫১।বর্তমানে তিনি গুজরাটে কর্মরত একজন আইএএস অফিসার। নেহার জন্ম রাজস্থানের জয়পুরে এবং বেড়ে ওঠা ছত্তিশগড়ে। বাবা ছিলেন সিনিয়র ইনকাম ট্যাক্স অফিসার। চাকরি সূত্রে প্রায়ই বাবাকে বদলি হয়ে যেতে হত। এর ফলে তিনি ছোটবেলায় এক জায়গায় বেশিদিন থাকতে পারেননি। বারবার বদল করতে হয়েছে স্কুল। তিনি পড়াশোনা করেন জয়পুরের স্কুলে। কিন্তু কিছুদিনের মধ্যেই বাবার বদলির কারণে ভোপালের কিডজি হাই স্কুলে ভর্তি হন। এরপর ছত্তিশগড়ের ডিপিএস বিলাসপুর স্কুলে পড়াশোনা করেন। বরাবরই ভাল ছাত্রী ছিলেন নেহা। স্কুলের পর্ব শেষ করে রায়পুরের ডিবি গার্লস কলেজে ভর্তি হন তিনি। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রথম স্থান লাভ করেন তিনি।

তিনি জানিয়েছেন, বাবাই ছিলেন তাঁর অনুপ্রেরণা। বাবাকেই দেখেই তিনি সিভিল সার্ভিসে আসতে চেয়েছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয় পাশ করার পর শুরু হয় তার আসল লড়াই। সে যাত্রাপথ খুব একটা সোজা ছিল না নেহার। প্রস্তুতি শুরু করেন ইউপিএসসির জন্য। প্রথম তিনবার সফল হতে পারেননি তিনি। এরপর তিনি সিদ্ধান্ত নেন সোশ্যাল মিডিয়া থেকে দূরে থাকার। সবকিছু থেকে নিজেকে সরিয়ে নেন। এমনকি ধরতেন না ফোনও। যেতেন না পরিবারের কোনও অনুষ্ঠানে। প্রথমের দিকে ইউপিএসসি পাশ করতে না পারলেও এই সময় তিনি একাধিকবার এসএসসি পরীক্ষায় পাশ করেন। কিন্তু সে চাকরি তিনি নেননি, তার লক্ষ্যই ছিল আইএএস অফিসার হওয়া। অবশেষে চতুর্থবারের চেষ্টায় ভাগ্যে শিঁকে ছেড়ে তাঁর। ২০২১ সালে মাত্র চব্বিশ বছর বয়সে পাশ করেন ইউপিএসসি। ছুঁলেন স্বপ্নকে। হলেন একজন আইএএস অফিসার।

যিনি একটা সময়ে সব কিছু থেকে দূরে ছিলেন, সফলতা আসার পর সেই নেহারই ২৮ হাজারের ওপর ইনস্টাগ্রামে ফলোয়ারস। সেখানে তিনি এখন ভারতের অন্যতম কঠিন পরীক্ষা পাশ করার গল্প বলে উদ্বুদ্ধ করেন সকলকে। এক সাক্ষাৎকারে নেহা বলেন, ‘বেড়াতে না যাওয়া বা কিছু না কেনা কোনও ত্যাগ নয়। যখন আপনি সারাদিন কাজ করার পর বাড়ি ফিরে আপনার সন্তানের জন্য প্রচেষ্টা করেন, তখন তাকে ত্যাগ বলে। কাজ থেকে বাড়ি ফেরার ৩০ মিনিটের মধ্যেই আমার বাবা অঙ্ক থেকে ইতিহাস পর্যন্ত আমার ক্লাস নিতেন।’ তাঁর আইএএস অফিসার হওয়ার যাত্রা সম্পর্কে নেহা বলেন, ‘এই যাত্রা আমাদের কঠোর পরিশ্রম, অধ্যবসা, কখনও হার না মানার মনোভাব এবং সময়কে ধরে রাখার শিক্ষা দেয়।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *