
এক দম্পতিকে বেআইনি ভাবে শিশু কেনার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং তাদের কাছে থাকা দু’মাসের শিশুকন্যাকেও উদ্ধার করেছে সিআইডি। সূত্রের খবর, বেআইনি ভাবে শিশু বিক্রির তদন্তে নেমে নাগেরবাজার থানার যশোর ডের একটি আবাসনে হানা দেওয়া হয়। সেখানেই ১০তলা থেকে গ্রেফতার করা হয় ওই দম্পতিকে। ধৃতদের নাম বিজয় সন্থালিয়া এবং নেহা সন্থালিয়া। তাদের মঙ্গলবার হাওড়া আদালতে পেশ করা হলে তাঁদের জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক। উদ্ধার হওয়া শিশুটিকে তুলে দেওয়া হয়েছে শিশু কল্যাণ সমিতির হাতে।
বেআইনি ভাবে শিশু বিক্রির অভিযোগে ওই দম্পতি-সহ মোট ছ’জনকে গ্রেফতার করল সিআইডি। গত নভেম্বরে বিহার থেকে এক শিশুকে নিয়ে এসে শালিমার স্টেশনের সামনে বিক্রির চেষ্টার অভিযোগে এক দম্পতিকে গ্রেফতার করেছিল সিআইডি। তাদের জেরা করে জ্যোৎস্না মণ্ডল নামে অপর এক মহিলাকেও গ্রেফতার করেন তদন্তকারীরা। জ্যোৎস্নাকে জেরা করে জানা যায়, নভেম্বরে বিহারের গয়া থেকে আনা এক সদ্যোজাতকে প্রায় সাত লক্ষ টাকায় সে বিক্রি করেছে সন্থালিয়া দম্পতির কাছে। এক তদন্তকারী অফিসার জানান, জ্যোৎস্না জানিয়েছে, সে শিশু বিক্রি চক্রের চাঁই মানিকের কাছ থেকে ওই শিশুটিকে পেয়েছিল। ধৃত সন্থালিয়া দম্পতির এক বন্ধুর সঙ্গে তার যোগাযোগ হয়। তাঁর মাধ্যমেই ওই শিশুটিকে দম্পতির হাতে তুলে দেয় জোৎস্না। ধৃত দম্পতির ওই বন্ধুর খোঁজ শুরু করেছেন তদন্তকারীরা।
ধৃত দম্পতিকে জেরা করে গোয়েন্দারা জেনেছেন, তাঁদের সাত বছরের একটি ছেলে রয়েছে। তবে একটি কন্যাসন্তানেরও ইচ্ছে ছিল তাঁদের। কিন্তু শারীরিক সমস্যার কারণে তাঁদের আর সন্তান হতে পারবে না, এ কথা জানার পরেই তাঁরা সন্তান দত্তক নেওয়া প্রসঙ্গে কথা ভাবেন এবং সেই মতো নভেম্বরের গোড়ার দিকে জ্যোৎস্নার থেকে সাত লক্ষ টাকায় ওই শিশুকন্যাটিকে কিনে নেন তাঁরা। সিআইডি জানতে পেরেছে, বেআইনি ভাবে শিশু বিক্রি এবং পাচারের মামলার এই চক্রের মাথা গয়ার বাসিন্দা এক মহিলা। ওই মহিলাই পটনা এবং গয়ার বিভিন্ন নার্সিংহোম এবং আইভিএফ সেন্টার থেকে সদ্যোজাতদের সংগ্রহ করে এবং পরে তাদের বিক্রির জন্য তুলে দেওয়া হয় মানিকের হাতে। এক তদন্তকারী জানান, সন্থালিয়া দম্পতি ছাড়াও মানিক এবং জ্যোৎস্না আরও বহু দম্পতিকে বেআইনি ভাবে শিশু বিক্রি করেছে। ধৃতদের জেরা করে এমন বেশ কিছু দম্পতির সন্ধান তারা পেয়েছেন।