
সকালের এক কাপ কফি শুধু মন চাঙ্গা করে না, বরং এটি দীর্ঘমেয়াদে বার্ধক্য প্রতিরোধ ও দীর্ঘায়ু বৃদ্ধিতে সহায়ক—সম্প্রতি এমনই তথ্য উঠে এসেছে যুক্তরাষ্ট্রে পরিচালিত এক দীর্ঘমেয়াদি গবেষণায়। নিউট্রিশন ২০২৫ সম্মেলনে উপস্থাপিত এই গবেষণায় বলা হয়েছে, প্রতিদিন নিয়মিত ক্যাফেইনযুক্ত কফি পান করা মধ্যবয়স্ক নারীদের বার্ধক্যে পৌঁছেও শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ থাকতে সাহায্য করে।
গবেষণার মূল তথ্য:
গবেষণাটি প্রায় ৩০ বছর ধরে ৪৭,০০০-এর বেশি নারীর উপর পরিচালিত হয়েছে।দেখা গেছে, যারা দিনে ২–৫ কাপ ক্যাফেইনযুক্ত কফি পান করেন, তারা ৭০ বছর বা তার বেশি বয়সে পৌঁছেও বড় কোনো রোগ, শারীরিক অক্ষমতা বা মানসিক অস্পষ্টতা ছাড়াই সুস্থ জীবনযাপন করেছেন।গবেষণায় কফির উপকারিতার পেছনে থাকা উপাদান হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে ক্লোরোজেনিক অ্যাসিড ও মাইক্রোনিউট্রিয়েন্টস, যা প্রদাহ কমাতে, ধমনীর কার্যকারিতা বজায় রাখতে এবং হজমপ্রক্রিয়া উন্নত করতে সাহায্য করে।
গবেষণার প্রধান গবেষক সারা মাহদভি, যিনি বর্তমানে টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক, বলেন, “কফি কোনো জাদুকরী ওষুধ নয়, তবে এটি স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের একটি শক্তিশালী অংশীদার হতে পারে।” তিনি আরও বলেন, কফির উপকারিতা কেবল ক্যাফেইনের কারণে নয়, বরং এতে থাকা বায়োঅ্যাক্টিভ যৌগগুলোর সম্মিলিত প্রভাবে।
গবেষকরা সতর্ক করে জানিয়েছেন, ডিক্যাফ কফি, চা বা কোলা জাতীয় পানীয় এই উপকারিতা দেয় না, বরং বর্ষীয়ান বয়সে স্বাস্থ্য সমস্যার সাথে সম্পর্কিত হতে পারে।দিনে ২–৪ কাপ কফি নিরাপদ হিসেবে বিবেচিত হলেও অতিরিক্ত ক্যাফেইন গ্রহণে ঘুমের সমস্যা, উদ্বেগ বা হৃৎস্পন্দনের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
এই গবেষণা প্রমাণ করে, প্রতিদিনের এক কাপ কফি শুধু অভ্যাস নয়—এটি হতে পারে সুস্থ বার্ধক্য ও দীর্ঘ জীবনের এক নির্ভরযোগ্য সঙ্গী। তবে এর সর্বোচ্চ উপকার পেতে হলে কফির সঙ্গে চাই সুষম খাদ্যাভ্যাস, নিয়মিত ব্যায়াম ও ধূমপান থেকে বিরত থাকা।