June 7, 2025
PST 5

আসামের মুখ্যমন্ত্রী ডঃ হিমন্ত বিশ্ব শর্মা এবং মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমা সোমবার আসাম-মেঘালয় সীমান্ত বিরোধ, গুয়াহাটির আকস্মিক বন্যা এবং যৌথ বিদ্যুৎ ও সেচ প্রকল্পের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন। কৈনাধারার স্টেট গেস্ট হাউসে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে দুই মুখ্যমন্ত্রী পারস্পরিক আস্থা ও বোঝাপড়ার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের অঙ্গীকার করেন।

বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন উভয় মুখ্যমন্ত্রী। ডঃ শর্মা জানান, আসাম-মেঘালয় সীমান্তে বিতর্কিত ছয়টি এলাকার মধ্যে পাঁচটিতেই স্তম্ভ স্থাপনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যা আলোচনার মাধ্যমেই সম্ভব হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে, আগস্ট মাসের মধ্যেই এই স্তম্ভ নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হবে। পিলিংকাটা অঞ্চলের সমস্যা সমাধান হলেও, মেঘালয় সরকার কয়েকটি গ্রামের পুনর্বিন্যাসের অনুরোধ জানিয়েছে এবং মুখ্যমন্ত্রী তাতে সম্মতি দিয়েছেন। তবে ব্লক I ও II, পিসিয়ার-খান্ডুলি, বরদুয়ার, লংওয়া-মাওতামুর, দেশদুমরিয়া এবং লাংপিহের মতো বাকি ছয়টি বিতর্কিত পয়েন্টে আলোচনা অব্যাহত থাকবে।

গুয়াহাটির নগর বন্যা প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, মেঘালয় থেকে আসামে জলপ্রবাহের গতিপথ নির্ধারণের জন্য নর্থইস্ট স্যাটেলাইট অ্যাপ্লায়েন্স সেন্টার (NESAC) তিন মাসের মধ্যে স্যাটেলাইট চিত্র সরবরাহ করবে। এই ছবি ও একটি বিস্তারিত রিপোর্ট আইআইটি রুরকিতে পাঠানো হবে, যারা সমস্যার সমাধানে পথ দেখাবে। এরপর দুই রাজ্য সরকার যৌথভাবে সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের পদক্ষেপ নেবে। তিনি জানান, মেঘালয় পাহাড় থেকে আসামে জল প্রবেশের তিনটি প্রধান পথ রয়েছে। তবে, মেঘালয়ের পাহাড়গুলি ব্যক্তিগত মালিকানাধীন হওয়ায় এর সমাধানে মেঘালয় সরকারের কিছু অসুবিধা হতে পারে।

এছাড়াও, দুই মুখ্যমন্ত্রী যৌথভাবে ৫৫ মেগাওয়াটের একটি বিদ্যুৎ ও সেচ প্রকল্প স্থাপনের বিষয়েও আলোচনা করেছেন। কামরূপ ও গোয়ালপাড়া জেলার কৃষি জমিতে সেচের সুবিধা পৌঁছে দিতে আসাম এই প্রকল্পটি ব্যবহার করবে। প্রকল্প শুরুর আগে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে আলোচনা করা হবে বলেও জানান মুখ্যমন্ত্রী।

মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমা বলেন, সমস্যা ও চ্যালেঞ্জ থাকবেই, তবে তা খোলা মনে সমাধান করতে হবে। তিনি বলেন, “যেসব এলাকায় সমাধান হয়েছে, সেখানে আমরা স্তম্ভ স্থাপনের কাছাকাছি পৌঁছে গেছি। পিলিংকাটা নিয়ে চুক্তির পর কিছু ছোটখাটো সমস্যা দেখা দিয়েছে। আমরা আসাম সরকারকে সেই সমস্যাগুলো সমাধানের অনুরোধ করেছি এবং তারা তাতে রাজি হয়েছে।”

গুয়াহাটির আকস্মিক বন্যা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে সাংমা বলেন, এটি শুধু গুয়াহাটি নয়, মেঘালয়ের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকেও প্রভাবিত করে। এই সমস্যা সমাধানে দুই রাজ্যকে একসঙ্গে কাজ করার উপর জোর দেন তিনি।

কুলসি প্রকল্পের বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী সাংমা বলেন, এটি উভয় রাজ্যের জন্যই লাভজনক হবে। মেঘালয় এই জলবিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে বিদ্যুৎ পাবে এবং আসাম পাবে সেচের জন্য জল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *