
আসন্ন ২০২৬ সালের অসম বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে ডিব্রুগড়ে অনুষ্ঠিত বিজেপির দুই দিনব্যাপী বর্ধিত কার্যনির্বাহী বৈঠকে ছায়া ফেলেছে বর্ষীয়ান নেতা রাজেন গোহাইনের আকস্মিক পদত্যাগ। ৭৪ বছর বয়সী এই চারবারের সাংসদ এবং প্রাক্তন রেল প্রতিমন্ত্রী ৯ অক্টোবর, ২০২৫ তারিখে গুয়াহাটির বাজপেয়ী ভবনে রাজ্য বিজেপি সদর দপ্তরে নিজের পদত্যাগপত্র জমা দেন। তাঁর সঙ্গে আরও ১৭ জন বিজেপি সদস্য দল ছাড়েন, যাঁদের অধিকাংশই উপরের ও মধ্য অসমের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে এসেছেন।
গোহাইন তাঁর পদত্যাগপত্রে অভিযোগ করেন, দলটি অসমের জনগণের কাছে করা প্রতিশ্রুতি পূরণে ব্যর্থ হয়েছে এবং আদিবাসী সম্প্রদায়ের স্বার্থ উপেক্ষা করে বহিরাগতদের বসবাসের সুযোগ করে দিয়েছে। তিনি আরও অভিযোগ করেন, রাজ্য নেতৃত্ব সাম্প্রদায়িক রাজনীতিকে উৎসাহ দিচ্ছে এবং শতাব্দীপ্রাচীন অসমীয়া সমাজকে বিভক্ত করছে।
বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ শইকিয়া গোহাইনের পদত্যাগকে দুর্ভাগ্যজনক বলে অভিহিত করেন এবং জানান, তাঁর উচিত ছিল দলের অভ্যন্তরীণ মঞ্চে নিজের অসন্তোষ প্রকাশ করা। গোহাইনের দীর্ঘ ৩৪ বছরের রাজনৈতিক জীবনে তিনি নওগাঁও লোকসভা কেন্দ্র থেকে টানা চারবার নির্বাচিত হন এবং ২০১৬ সালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর প্রথম মন্ত্রিসভায় রেল প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।
ডিব্রুগড়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে বিজেপি নেতৃত্ব ২০২৬ সালের নির্বাচনের রোডম্যাপ তৈরির পরিকল্পনা করলেও, গোহাইনের পদত্যাগে দলের অভ্যন্তরীণ বিভাজন ও নেতৃত্ব সংকট স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই পদত্যাগ বিজেপির জন্য একটি বড় ধাক্কা এবং আসন্ন নির্বাচনে দলীয় ঐক্য ও জনভিত্তি ধরে রাখতে এটি একটি চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে।