
নয়াদিল্লি, ৬ সেপ্টেম্বর — ইস্পাত শিল্পে কার্বন নিঃসরণ কমাতে এবং টেকসই উৎপাদনকে উৎসাহ দিতে ভারত সরকার একটি ₹৫,০০০ কোটি টাকার জাতীয় মিশন চালু করার পরিকল্পনা করছে। এই প্রকল্পের লক্ষ্য হল প্রাথমিক ও গৌণ উভয় ধরনের ইস্পাত উৎপাদকদের আর্থিক সহায়তা প্রদান করে “সবুজ ইস্পাত” উৎপাদনকে উৎসাহিত করা।
এই প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত থাকবে:
- সুবিধাজনক ঋণ,
- ঝুঁকি গ্যারান্টি,
- অন্যান্য আর্থিক সহায়তার প্যাকেজ,
যা আগামী অর্থবছরে অনুমোদনের পর চালু হতে পারে।
ভারতের গৌণ ইস্পাত উৎপাদকরা দেশের মোট উৎপাদনের প্রায় ৫০% সরবরাহ করে থাকেন। তারা সাধারণত স্ক্র্যাপ ও স্পঞ্জ আয়রনের উপর নির্ভর করেন এবং ইলেকট্রিক আর্ক বা ইনডাকশন ফার্নেস ব্যবহার করেন, যা তুলনামূলকভাবে কম খরচে হলেও বেশি দূষণকারী। এই প্রকল্পের মাধ্যমে তাদের প্রযুক্তি পরিবর্তনের জন্য প্রয়োজনীয় বিনিয়োগে সহায়তা দেওয়া হবে।
জাতীয় ইস্পাত নীতি ২০১৭ অনুযায়ী, ২০৩০ সালের মধ্যে প্রতি টন ক্রুড ইস্পাত উৎপাদনে কার্বন ডাই-অক্সাইড নিঃসরণ ২.৬–২.৭ টনে নামিয়ে আনার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। বর্তমানে প্রাথমিক উৎপাদকদের মধ্যে আধুনিক প্রযুক্তির গ্রহণযোগ্যতা ৫০–৬০% হলেও গৌণ উৎপাদকদের মধ্যে তা ৫০%-এর নিচে।
এই মিশনের পাশাপাশি সরকার একটি Green Steel Mission চালু করার প্রস্তুতি নিচ্ছে, যার মধ্যে থাকতে পারে:
- Production Linked Incentive (PLI) স্কিম,
- নবায়নযোগ্য শক্তির ব্যবহারে উৎসাহ,
- সরকারি সংস্থাগুলোর জন্য সবুজ ইস্পাত ক্রয়ের বাধ্যবাধকতা।
একটি যৌথ গবেষণায় (EY-Parthenon, WWF-India, CII-GBC) অনুমান করা হয়েছে যে ভারতে সবুজ ইস্পাতের চাহিদা ২০৩০ সালের মধ্যে ৪.৪৯ মিলিয়ন টনে পৌঁছাবে এবং ২০৫০ সালের মধ্যে তা বেড়ে দাঁড়াবে ১৭৯.১৭ মিলিয়ন টনে। নির্মাণ, পরিকাঠামো এবং অটোমোবাইল খাত এই চাহিদা বৃদ্ধির মূল চালিকাশক্তি হবে।
এই উদ্যোগ ভারতের ২০৭০ সালের নেট-জিরো কার্বন নিঃসরণ লক্ষ্যে পৌঁছানোর পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। শিল্প বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই ধরনের আর্থিক সহায়তা ও নীতিগত উৎসাহ ইস্পাত শিল্পে পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তির দ্রুত গ্রহণে সহায়ক হবে।