বই জ্ঞান অর্জনের অন্যতম প্রধান মাধ্যম। বইয়ের কারণেই আমাদের কৃষ্টি, সংস্কৃতি ও পরম্পরা বজায় থাকে। আর এই বইকে জনসাধারণের মাঝে পৌঁছে দেন বিভিন্ন পুস্তক ব্যবসায়ীগন। এইক্ষেত্রে ছেলেমেয়েদের সঠিক দিশা দেখাতে তাঁদের ভূমিকাও অপরিসীম। রবিবার আগরতলার মহারাণী তুলসীবতি বালিকা বিদ্যালয়ের প্রেক্ষাগৃহে দি অল ত্রিপুরা বুক সেলার্স এন্ড পাবলিশার্স এসোসিয়েশনের উদ্যোগে আয়োজিত ৪১তম বার্ষিক সাধারণ সভা উদ্বোধনী পর্বে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা।
এই সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ সাহা বলেন, এখানে বিভিন্ন দাবিদাওয়া রাখা হয়েছে। এবিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা সাপেক্ষে নিশ্চয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আপনাদের প্রতিনিধি হয়ে জনপ্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচিত হয়ে সংখ্যাধিক্যের কারণে আমরা সরকার গঠন করেছি। কাজেই আমাদের দায়িত্ব বর্তায় কোথাও সমস্যা হলে তার সমাধান করা। আপনাদের পেশা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এর গুরুত্ব রয়েছে অনেক। ছোটবেলা থেকেই আমরা দেখে এসেছি পরীক্ষার পরে রেজাল্ট বের হলেই বইয়ের জন্য বইয়ের দোকানে যেতে হয়। যা অন্যরকম অনুভূতি। বই মানুষের চেতনার সীমানা বাড়ায়। বই হচ্ছে সমাজের একটা প্রতিবিম্ব। এরকম একটা মহান পেশার সঙ্গে আপনারা যুক্ত রয়েছেন। আপনাদের সমস্যাগুলি কিছুটা হলেও সমাধানের চেষ্টা করেছি। পাঠ্যপুস্তকের বাইরেও অনেক বই রয়েছে। যার কোন সীমানা নেই। বই কেনার জন্য সাধারণ মানুষ উদগ্রীব হয়ে বসে থাকতেন। এখনো বহু মানুষের এবং নতুন প্রজন্মের মধ্যে বই পড়ার শখ রয়েছে। বই পড়ার মধ্যে যে মাহাত্ম্য রয়েছে সেটা অন্য কোথাও পাওয়া যায় না। ইন্টারনেটের যুগে এখন সবকিছু আমাদের হাতের মুঠোয়। কিন্তু বই আমাদের বরাবরই আকৃষ্ট করে। বই পড়ার পরে যেভাবে মস্তিষ্কে চলে যায় সেটা কিন্তু মোবাইল বা ইন্টারনেটের মাধ্যমে পাওয়া যায় না।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা প্রতি বছরই বইমেলার আয়োজন করি। কিন্তু সত্যি বললে সারা বছরই বইমেলা। বইয়ের দোকান মানে বছরভর বইমেলা। শিক্ষার্থীরা যখন বইয়ের দোকানে যায় তখন তাদের মধ্যে একটা অন্য ধরণের অনুভূতি চলে আসে। আর স্কুল থেকে বই দেওয়া হলে সেই অনুভূতি আসবে না তাদের। বইয়ের লিস্ট ধরে দোকানে যাওয়ার মধ্যে একটা আলাদা অনুভূতি আসে। বই মানে মেধা ও মননের উৎস। বইয়ের বিক্রেতা ও প্রকাশক হিসেবে ছেলেমেয়েদের সঠিক দিশা দেখানোর দায়িত্বও অনেকাংশে আপনাদের উপর বর্তায়। আপনাদের এই সংগঠন প্রায় ৫০ বছরের পুরনো। আপনারা গরীবদের বই দিয়ে সাহায্য করেন। বিভিন্ন সামাজিক কাজের পাশাপাশি কৃতি শিক্ষার্থীদেরও সম্বর্ধনা দেন। আপনারা শুধু ব্যবসায়িক দৃষ্টিভঙ্গিতে সীমাবদ্ধ না থেকে সমাজের জন্যও এগিয়ে আসেন। এদিন সভায় উপস্থিত ছিলেন সমাজ কল্যাণ ও সমাজ শিক্ষা দপ্তরের মন্ত্রী টিংকু রায়, বুক সেলার্স এন্ড পাবলিশার্স সংগঠনের কর্মকর্তাগণ। সভায় আয়োজক সংগঠনের পক্ষ থেকে রাজ্যের বন্যাদুর্গতদের জন্য ৫০,০০০ টাকার অর্থ রাশি মুখ্যমন্ত্রী ত্রাণ তহবিলের জন্য প্রদান করা হয়। আর এই মহতী দানের জন্য উদ্যোক্তাদের ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন মুখ্যমন্ত্রী।