
আইএসএল-এর ভবিষ্যৎ ঘিরে তৈরি হওয়া অনিশ্চয়তা নিয়ে গভীর উদ্বেগে ক্লাবগুলো। প্রতিযোগিতার অধিকাংশ ক্লাবই চাইছে দ্রুত সমাধান। সেই উদ্দেশ্যে আটটি ক্লাব একজোট হয়ে অল ইন্ডিয়া ফুটবল ফেডারেশনকে (এআইএফএফ) চিঠি দিয়েছে, যাতে ফেডারেশন সুপ্রিম কোর্টে গিয়ে বিষয়টির নিষ্পত্তি চায়। তবে এই চিঠিতে সই করেনি কলকাতার দুই প্রধান ক্লাব — ইস্টবেঙ্গল এবং মোহনবাগান।
সূত্রের খবর, মোহনবাগান এবং ইস্টবেঙ্গলের কর্পোরেট মালিক সংস্থাগুলি— যথাক্রমে আরপিএসজি গ্রুপ এবং ইমামি— আইনজটিলতা থেকে নিজেদের দূরে রাখতে চায়। তাদের মতে, আইএসএলে তারা যুক্ত হয়েছে ফুটবলের প্রতি ভালোবাসা ও ব্যবসায়িক দিক বিবেচনা করে, আদালতের জটিলতায় না জড়িয়ে থাকা তাই তাদের অগ্রাধিকার।
শুধু ইস্টবেঙ্গল বা মোহনবাগান নয়, বেঙ্গালুরু এফসিও চিঠিতে সই করেনি। এই ক্লাবটির মালিক জেএসডব্লিউ গ্রুপও আপাতত আইনি পথে না গিয়ে সমস্যার অন্য সমাধান খুঁজতে আগ্রহী।
সম্প্রতি এআইএফএফ সভাপতি কল্যাণ চৌবে আইএসএল ক্লাবগুলোর সঙ্গে একটি বৈঠক করেন। তবে ওই বৈঠকে তিনি প্রতিযোগিতা নিয়ে কোনও সুস্পষ্ট রোডম্যাপ দিতে পারেননি। তিনি জানান, আইএসএল শুরু হতে দেরি হতে পারে, ফরম্যাট বা অন্য কিছু বদল হতে পারে, তবে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। এই অনিশ্চয়তার মধ্যেই সেপ্টেম্বরে সুপার কাপ আয়োজনের প্রস্তাব দেন তিনি।
এই পরিস্থিতিতে আইএসএলের ১৩টি ক্লাবের মধ্যে ১১টি ফেডারেশনকে যৌথভাবে একটি চিঠি দেয়। তবে পরে জানা যায়, প্রকৃতপক্ষে আটটি ক্লাবই ওই চিঠিতে সই করেছে।
চিঠিতে ক্লাবগুলো লিখেছে, “এআইএফএফের কাছে আমাদের বিনীত অনুরোধ, মামলার প্রধান পক্ষ হিসেবে বর্তমান পরিস্থিতিকে গুরুত্ব দিয়ে সুপ্রিম কোর্টের নজরে আনা হোক। আইএসএল-সহ অন্যান্য প্রতিযোগিতার স্বার্থে মামলাটি দ্রুত শুনানির জন্য তালিকাভুক্ত করার আবেদন করা হোক। আমরা মনে করি, এই পদক্ষেপ ভারতীয় ফুটবলের সকল পক্ষের জন্য সহায়ক হবে।”
মূল সমস্যা এআইএফএফ এবং ফুটবল স্পোর্টস ডেভেলপমেন্ট লিমিটেড (এফএসডিএল)-এর মধ্যেকার চুক্তি নবীকরণ নিয়ে। সুপ্রিম কোর্টের রায়ে ফেডারেশনের নতুন সংবিধান ঘোষণার পরেই একটি নতুন কমিটি গঠিত হতে পারে। এই প্রক্রিয়া সেপ্টেম্বর পর্যন্ত গড়াতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
এদিকে, পরিস্থিতির জেরে বেশ কয়েকটি ক্লাব যেমন ওড়িশা এফসি, চেন্নাইয়িন এফসি, বেঙ্গালুরু এফসি ইতিমধ্যেই খরচ বাঁচাতে ফুটবলার ও কর্মীদের সঙ্গে চুক্তি স্থগিত রেখেছে কিংবা বেতন দেওয়া বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
ক্লাব কর্তাদের একাংশের অভিযোগ, এআইএফএফ যথেষ্ট সক্রিয় নয়, যার ফলে সমস্যা আরও জটিল হয়ে উঠছে এবং ক্লাবগুলোর অস্তিত্ব সঙ্কটের মুখে পড়ছে।