
নলবাড়ি, ১০ জুলাই: অসম প্রদেশ কংগ্রেস কমিটি (APCC) বৃহস্পতিবার নলবাড়িতে তীব্র প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করে রাজ্যের নগর উন্নয়ন মন্ত্রী ও নলবাড়ির বিধায়ক জয়ন্ত মল্লবারুয়ার বিরুদ্ধে সম্পত্তি অধিগ্রহণ সংক্রান্ত অভিযোগে তদন্তের দাবি জানিয়েছে। রাজীব ভবন থেকে শুরু হয়ে থানাচারিআলি পর্যন্ত পদযাত্রা করে কংগ্রেস কর্মীরা স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার দাবিতে স্লোগান তোলে।
বিক্ষোভ চলাকালীন পুলিশ তাঁদের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে যেতে বাধা দেয়। পরে এক সহকারী কমিশনার এসে উপস্থিত হলে কংগ্রেস প্রতিনিধিদল গভর্নরের উদ্দেশে একটি স্মারকলিপি তাঁর হাতে তুলে দেয়।
APCC-র সম্পাদক দিব্যজ্যোতি হালই বলেন, “যখন সমগ্র অসম মূল্যবৃদ্ধির চাপে জর্জরিত, তখন নলবাড়ির বিধায়কের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আমাদের গর্বের শহরকে কলঙ্কিত করেছে।” তিনি জানান, যদি সরকার তদন্ত না করে, তাহলে আন্দোলন আরও জোরদার হবে।
জেলা কংগ্রেস সভাপতি রাতুল পাটোয়ারি বলেন, “এই সরকার সীমা ছাড়িয়ে গেছে। গরু কেনা, জমি চুক্তি, ঋণ প্রকল্পের অপব্যবহার—সব ক্ষেত্রেই অনিয়ম চলছে। ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে শূন্য সহনশীলতা’—এই স্লোগান এখন হাস্যকর।”
অন্যদিকে, মন্ত্রী জয়ন্ত মল্লবারুয়া ৬ জুলাই একটি বিবৃতি দিয়ে অভিযোগগুলিকে “নির্বাচনপূর্ব কুৎসা প্রচার” বলে অভিহিত করেন। তিনি বলেন, “এই অভিযোগ শুধু আমার ব্যক্তিগত সম্মানহানিই নয়, বরং ১.০৬ লক্ষ ভোটারের অপমান।” তাঁর দাবি, ভারতীয় আইনে একজন ব্যক্তি সর্বোচ্চ ৫০ বিঘা জমি রাখতে পারেন, তাই তাঁর স্ত্রীর নামে শত শত বিঘা জমির মালিকানা “আইনত অসম্ভব”।
সিভাসাগরের বিধায়ক অখিল গগৈ অভিযোগ করেন, মল্লবারুয়া রঙিয়া অঞ্চলে বরালিয়া নদীর ধারে প্রায় ৮৫ বিঘা অ-নকশাভুক্ত সরকারি জমি দখল করেছেন এবং তাঁর পরিবার ৩৯ বিঘা জমি কিনেছেন মন্ত্রিত্বকালীন সময়ে। তিনি প্রশ্ন তোলেন, “সরকার কি এই জমিতে বুলডোজার চালাবে? মন্ত্রিত্ব থেকে তাঁকে সরানো হবে কি?”
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজ্যের রাজনৈতিক মহলে উত্তেজনা ছড়িয়েছে। কংগ্রেসের দাবি, দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রকৃত পদক্ষেপ না হলে তাঁরা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। মল্লবারুয়ার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ এখন রাজ্যের জনগণের আস্থা ও প্রশাসনিক স্বচ্ছতার বড় পরীক্ষা হয়ে উঠেছে।