
রাজ্যসভায় জয়শঙ্কর বলেন, ‘‘বিতাড়িত অবৈধবাসীদের সঙ্গে যাতে কোনও দুর্ব্যবহার না করা হয় তা নিশ্চিত করতে ভারত সরকার আমেরিকার সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছিল।’’ হাতকড়া পরিয়ে, শিকল দিয়ে বেঁধে আমেরিকার অবৈধবাসী ১০৪ জন ভারতীয়কে বুধবার ফেরত পাঠিয়েছে ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই বিষয়টি নিয়ে সংসদে বিরোধীদের বিক্ষোভের কারণে মুখ খুলল সরকার। বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর রাজ্যসভায় বললেন, ‘‘এটা নতুন কোনও ঘটনা নয়।’’ প্রত্যেকটি দেশেরই অবৈধ অভিবাসীদের ফেরত পাঠানোর অধিকার রয়েছে এবং প্রত্যেক দেশেরই অবৈধবাসী ফেরত নেওয়া উচিত। এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট দেশের নিজস্ব আইন রয়েছে বলে জানিয়ে কার্যত ট্রাম্প সরকারের হাতকড়া-শিকলের পক্ষে সাফাই দেন ভারতীয় বিদেশমন্ত্রী। সেই সাথে জানান, মহিলা ও শিশুদের শিকল-হতাকড়া পরানো হয়নি। বিমানের মধ্যে শৌচাগার ব্যবহারেরও অনুমতি দেওয়া হয়েছে অবৈধবাসীদের।
সংবাদ সংস্থা পিটিআই প্রকাশিত খবর জানাচ্ছে, অমৃতসরে ফেরত আসা অবৈধবাসীদের মধ্যে কয়েক জন জানিয়েছেন, পুরো বিমানযাত্রাতেই তাঁদের হাত-পা বাঁধা ছিল। প্রসঙ্গত, বুধবার দুপুরে অবৈধ অভিবাসীদের নিয়ে অমৃতসরের শ্রী গুরু রামদাসজি বিমানবন্দরে অবতরণ করে মার্কিন সেনাবাহিনীর সি-১৭ বিমান। বিমানটি মঙ্গলবার টেক্সাস থেকে রওনা দিয়েছিল। এই অবৈধ অভিবাসীদের মধ্যে ২৫ জন মহিলা এবং ১২ জন নাবালকও রয়েছেন। তাদের মধ্যে কনিষ্ঠতম সদস্যের বয়স চার বছর।
শুধুমাত্র ভারতীয় নয়, অন্য দেশের অবৈধবাসীদের ক্ষেত্রেও ট্রাম্প সরকার প্রত্যর্পণ নীতি প্রয়োগ করছে এটা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘‘এমন ঘটনা শুধু ভারতীয়দের সঙ্গে হচ্ছে না।’’ অবৈধ অভিবাসন ঠেকাতে সংশ্লিষ্ট সব দেশের দায়বদ্ধতা রয়েছে বলেও জানান তিনি। সেই সাথে, ইউপিএ জমানায় তথ্য-পরিসংখ্যান তুলে ধরে বিদেশমন্ত্রীর দাবি, এর আগেও আমেরিকা অবৈধ ভাবে অভিবাসী ভারতীয়দের ফেরত পাঠিয়ে ছিলো। বেসরকারি উড়ানের বদলে সি-১৭ গ্লোবমাস্টার সামরিক পরিবহণ বিমান ব্যবহার করা হলেও এ ক্ষত্রে স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওর মানা হয়েছে বলে জয়শঙ্করের দাবি। শিকলকাণ্ডের প্রতিবাদে বিরোধীদের বিক্ষোভের কারণে বৃহস্পতিবার সংসদের দু’কক্ষের অধিবেশন কয়েক দফা মুলতুবি হয়।