
আসামে ফের মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে জাপানি এনসেফালাইটিস (JE)। রাজ্যের স্বাস্থ্য দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত ৪৮ ঘণ্টায় এই মশাবাহিত ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে চারজনের মৃত্যু হয়েছে এবং ৩২ জন রোগীকে গুয়াহাটি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে (জিএমসিএইচ) ভর্তি করা হয়েছে।
সংক্রমণের অধিকাংশ ঘটনা ঘটেছে নলবাড়ি, মরিগাঁও, বারপেটা, শিবসাগর ও ডিব্রুগড় জেলায়। স্বাস্থ্য দপ্তর জানিয়েছে, বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতা ও মশার প্রজনন বৃদ্ধির ফলে JE ভাইরাসের প্রকোপ বেড়েছে। আক্রান্তদের মধ্যে বেশিরভাগই শিশু ও বয়স্ক নাগরিক।
রাজ্যজুড়ে জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিকদের সতর্কতা জারি করা হয়েছে এবং ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় ফগিং, কীটনাশক ছিটানো ও সচেতনতামূলক প্রচার শুরু হয়েছে। জিএমসিএইচ সূত্রে জানা গেছে, ভর্তি হওয়া রোগীদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হলেও অধিকাংশের চিকিৎসা চলছে স্থিতিশীলভাবে।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, JE ভাইরাসে আক্রান্ত হলে জ্বর, মাথাব্যথা, খিঁচুনি ও মানসিক বিভ্রান্তি দেখা দিতে পারে। দ্রুত চিকিৎসা না হলে এটি মস্তিষ্কে প্রদাহ সৃষ্টি করে প্রাণঘাতী হতে পারে। তবে JE প্রতিরোধে টিকাকরণ কার্যক্রম থাকলেও অনেক এলাকায় তা এখনও পর্যাপ্তভাবে পৌঁছায়নি।
রাজ্যের স্বাস্থ্য মন্ত্রী কেশব মহন্ত এক বিবৃতিতে বলেন, “জাপানি এনসেফালাইটিসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সরকার সর্বাত্মক ব্যবস্থা নিচ্ছে। জনগণকে মশার কামড় থেকে বাঁচতে সতর্ক থাকতে হবে এবং উপসর্গ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।”
ন্যাশনাল হেলথ মিশনের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে আসামে JE-তে আক্রান্ত হয়ে ৬৬ জনের মৃত্যু হয়েছিল এবং ৩৫০ জনের বেশি সংক্রমিত হয়েছিলেন।
রাজ্য সরকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে জেলাভিত্তিক মেডিকেল টিম গঠন করেছে এবং JE আক্রান্ত এলাকাগুলিতে মোবাইল মেডিকেল ইউনিট পাঠানো হয়েছে। স্বাস্থ্য দপ্তর জনগণকে মশা প্রতিরোধে মশারি ব্যবহার, জমা জল অপসারণ ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছে।