June 27, 2025
26

পৃথক দুটি ঘটনায় স্বামী খুনের অভিযোগে স্ত্রী, প্রেমিক এবং আরও কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ঘটনাগুলি দেশের দুই প্রান্তে—পশ্চিমবঙ্গের হুগলি এবং মেঘালয়ে—ঘটলেও, উভয় ক্ষেত্রেই উঠে এসেছে পূর্বপরিকল্পিত হত্যার ছক এবং বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের জটিলতা।

হুগলির জাঙ্গিপাড়া থানার কানাইপুর গ্রামে রবীন রুই দাস (৩৬) নামে এক যুবকের কঙ্কালসার দেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। অভিযোগ, স্ত্রী অপর্ণা রুই দাস, শ্বশুর জয়দেব রুই দাস, শ্যালক অভিজিৎ রুই দাস এবং শ্যালিকার স্বামী প্রদীপ পাত্র মিলে রবীনকে খুন করে দেহ লোপাট করেন। প্রায় ৪০ দিন নিখোঁজ থাকার পর রবীনের দেহ একটি গভীর নলকূপ থেকে উদ্ধার হয়।

পুলিশ জানিয়েছে, পারিবারিক অশান্তি এবং স্ত্রীর বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক এই হত্যার পেছনে মূল কারণ। অভিযুক্তরা জেরায় খুনের কথা স্বীকার করেছে এবং ঘটনার পুনর্নির্মাণে পুলিশকে সহায়তা করেছে।

অন্যদিকে, মধ্যপ্রদেশের ইন্দোরের বাসিন্দা সোনম রঘুবংশী তার স্বামী রাজা রঘুবংশীকে মেঘালয়ে মধুচন্দ্রিমার সময় খুনের অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছেন। তদন্তে উঠে এসেছে, সোনম তার প্রেমিক রাজ কুশওয়াহা-র সঙ্গে মিলে ভাড়াটে খুনি নিয়োগ করে স্বামীকে হত্যা করেন। চেরাপুঞ্জির একটি পাহাড়ি খাদে রাজার দেহ উদ্ধার হয়।

সোনম গাজিপুরে আত্মসমর্পণ করার পর পুলিশ আরও তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে, যারা পর্যটকের ছদ্মবেশে দম্পতির সঙ্গে ভ্রমণ করছিল এবং হত্যায় সক্রিয়ভাবে অংশ নেয়। পুলিশ জানিয়েছে, হত্যাকাণ্ডটি ছিল ঠান্ডা মাথায় পরিকল্পিত এবং আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে সংঘটিত একটি চুক্তিভিত্তিক খুন।

উভয় ঘটনাতেই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে খুন, ষড়যন্ত্র ও প্রমাণ লোপাটের ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। ফরেনসিক ও ডিজিটাল প্রমাণ সংগ্রহের পাশাপাশি ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে মৃতদের পরিচয় নিশ্চিত করা হচ্ছে। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দ্রুত চার্জশিট দাখিল করা হবে।

এই দুটি ঘটনা আবারও তুলে ধরেছে পারিবারিক সম্পর্কের জটিলতা এবং সামাজিক মূল্যবোধের অবক্ষয়। তদন্তকারীরা বলছেন, “এই ধরনের অপরাধ শুধু আইনশৃঙ্খলার প্রশ্ন নয়, সমাজের নৈতিক কাঠামোর প্রতিও এক বড় চ্যালেঞ্জ।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *