
ভারত সরকার ক্রিপ্টোকারেন্সি লেনদেনের ওপর নজরদারি বাড়ানোর পর এক গুরুত্বপূর্ণ সাফল্য অর্জন করেছে। সরকারের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, গত দুই অর্থবর্ষে ক্রিপ্টোকারেন্সি লেনদেনের মাধ্যমে মোট ৬৩০ কোটি টাকার অঘোষিত আয়ের সন্ধান পাওয়া গেছে। এই বিশাল অঙ্কের অপ্রকাশিত আয় দেশের ডিজিটাল অর্থনীতিতে কর ফাঁকির গভীরতা এবং এই বিষয়ে সরকারের কঠোর অবস্থানকে তুলে ধরে। এই প্রতিবেদনটি এই সংক্রান্ত মূল তথ্য, সরকারের পদক্ষেপ এবং এর আইনি প্রভাব নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবে।
কেন্দ্রীয় সরকারের অর্থ মন্ত্রক সূত্রে জানা গেছে, আয়কর বিভাগ ক্রিপ্টোকারেন্সি এক্সচেঞ্জ, ওয়ালেট এবং অন্যান্য ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের লেনদেনের তথ্য বিশ্লেষণ করে এই অঘোষিত আয়ের সন্ধান পেয়েছে। জানা গেছে যে, ব্যক্তি ও সংস্থাগুলো ক্রিপ্টোকারেন্সিতে বিনিয়োগ ও লেনদেন করে বিপুল পরিমাণ মুনাফা অর্জন করেছে, কিন্তু সেই আয় যথাযথভাবে কর রিটার্নে প্রকাশ করেনি। এই লেনদেনগুলো মূলত দুটি অর্থবর্ষের মধ্যে ঘটেছে।
এই ঘটনাটি ক্রিপ্টোকারেন্সির উপর করের আইনি কাঠামোকে আরও শক্তিশালী করার প্রয়োজনকে সামনে এনেছে। বর্তমানে, ক্রিপ্টোকারেন্সির লেনদেন থেকে অর্জিত আয়ের উপর ৩০% ফ্ল্যাট কর এবং ১% টিডিএস (TDS) প্রযোজ্য। এই ধরনের কর ফাঁকির ঘটনাগুলো এই নিয়মগুলির প্রয়োগ এবং কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ধরনের ঘটনা ক্রিপ্টোকারেন্সিকে বৈধতা দেওয়ার ক্ষেত্রে সরকারের সতর্ক অবস্থানকে আরও যুক্তিযুক্ত করবে। ভবিষ্যতে, সরকার ক্রিপ্টোকারেন্সি লেনদেনের উপর আরও কঠোর নজরদারি এবং নিয়মকানুন আরোপ করতে পারে, যাতে ডিজিটাল সম্পদকে ব্যবহার করে কোনো ধরনের কর ফাঁকি বা অবৈধ কার্যকলাপ চালানো সম্ভব না হয়।
ক্রিপ্টোকারেন্সি লেনদেনের মাধ্যমে ৬৩০ কোটি টাকার অঘোষিত আয়ের সন্ধান ভারতের কর ব্যবস্থার জন্য এক বড় চ্যালেঞ্জ এবং একইসাথে একটি সতর্কবার্তা। এটি প্রমাণ করে যে, ডিজিটাল যুগেও কর ফাঁকি দেওয়ার চেষ্টা চলছে। সরকারের এই সাফল্য একদিকে যেমন তাদের নজরদারির সক্ষমতা প্রমাণ করে, অন্যদিকে তেমনই এটি ডিজিটাল সম্পদ নিয়ে একটি শক্তিশালী এবং স্বচ্ছ আইনি কাঠামো তৈরির প্রয়োজনীয়তাকেও তুলে ধরে।