
টানা ভারী বর্ষণ, মেঘ ভাঙা বৃষ্টি ও হড়পা বানের জেরে বিপর্যস্ত উত্তর ভারতের তিন রাজ্য উত্তরাখণ্ড, হিমাচল প্রদেশ ও জম্মু-কাশ্মীর। একের পর এক দুর্ঘটনা, ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়া মানুষ, রাস্তাঘাট ও বিদ্যুৎ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় জনজীবন কার্যত স্তব্ধ হয়ে পড়েছে।
বৃহস্পতিবার গভীর রাতে উত্তরাখণ্ডের রুদ্রপ্রয়াগ ও চামোলি জেলায় ভয়াবহ মেঘ ভাঙা বৃষ্টির ঘটনা ঘটে। একাধিক পরিবার ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়ে, বহু মানুষ আহত হন। মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামী জানিয়েছেন, রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় রাস্তাঘাট বন্ধ হয়ে গেছে, ফলে বহু মানুষ আটকে আছেন। উদ্ধারকাজ পুরোদমে চলছে।
ইতিমধ্যেই শ্রীনগর-রুদ্রপ্রয়াগের মাঝখানে বদ্রীনাথ হাইওয়ে সম্পূর্ণ ডুবে গেছে আলকানন্দা নদীর জলে।
জানা যায় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত হিমাচলে বেশ কয়েকটি রাস্তা বন্ধ ছিল। বন্ধ রয়েছে দুটি জাতীয় সড়কও। পাশাপাশি বিদ্যুৎ ট্রান্সফরমার অচল হয়ে পড়েছে, ৪১৬টি জল সরবরাহ প্রকল্পে বিঘ্ন ঘটেছে। মানিমহেশ যাত্রায় আটকে পড়া প্রায় সাত থেকে আট হাজার তীর্থযাত্রীকে উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।
অন্যদিকে জম্মু ও কাশ্মীরেও একই চিত্র। টানা বৃষ্টিতে বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে জম্মু অঞ্চলের সমস্ত স্কুল আগামী ৩০ অগস্ট পর্যন্ত বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন। সেনাবাহিনী ও এয়ারফোর্স মিলিয়ে ১২টি হেলিকপ্টার ব্যবহার করে আটকে পড়া মানুষকে সরিয়ে আনা, খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তা পৌঁছে দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে।
আবহাওয়াবিদদের মতে, চলতি মৌসুমে পাহাড়ি রাজ্যগুলিতে মেঘ ভাঙা বৃষ্টি, হড়পা বান ও ভূমিধস প্রায় নিয়মিত হয়ে উঠছে, যার ফলে প্রাণহানি ও সম্পত্তির ক্ষতি ভয়াবহ আকার নিচ্ছে।
উত্তরবঙ্গের পর্যটন মহলও পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছে, কারণ এই সময় বহু ভ্রমণকারী হিমাচল ও উত্তরাখণ্ডে ধর্মীয় যাত্রায় অংশ নেন।