
সৌন্দর্যের রহস্য লুকিয়ে ত্বকে। ত্বক উজ্জ্বল ও সুন্দর থাকলে সাজগোজও ভালো হয়। ত্বকের জেল্লা ফিরিয়ে আনতে অনেকেই বেছে নেন ফেশিয়াল পদ্ধতি। দাগ-ছোপ কমানো হোক কিংবা নিস্তেজ ত্বকে প্রাণ ফেরানো— প্রতিটি ফেশিয়ালেরই রয়েছে আলাদা উপকারিতা।
এই তালিকায় দু’টি জনপ্রিয় ফেশিয়ালের নাম শোনা যায়— ডিট্যান এবং স্কিন ব্রাইটনিং ফেশিয়াল। তবে পুজোর আগে নজরকাড়া রূপ পেতে হলে, কোনটি বেছে নিবেন?
ডিট্যান এবং ব্রাইটনিং ফেশিয়াল
ডিট্যান ফেশিয়াল মূলত মুখের ট্যান দূর করার জন্য করা হয়। রোদে পুড়ে মুখে যে কালচে দাগ পড়ে, তা ত্বকের সৌন্দর্য নষ্ট করে দেয়। এই ফেশিয়ালের মাধ্যমে সেই দাগ হালকা করার চেষ্টা হয়। অন্যদিকে, স্কিন ব্রাইটনিং ফেশিয়ালের প্রধান উদ্দেশ্য ত্বককে আরও উজ্জ্বল ও প্রাণবন্ত করে তোলা। এক অর্থে, দু’টি ফেশিয়ালই দাগছোপ কমানো ও অসমান ত্বকের রঙে ভারসাম্য আনার কাজ করে। তবে তাদের কার্যপ্রণালী ও উপকারিতায় কিছু পার্থক্য অবশ্যই রয়েছে।
ডিট্যান ফেশিয়াল
সমুদ্র সৈকতে ঘুরতে গেলে কিংবা রোদে দীর্ঘ সময় কাটালে মুখে ট্যানের সমস্যা দেখা দেয়। কারও কারও ক্ষেত্রে পিগমেন্টেশনও তৈরি হয়। সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি ত্বকে মেলানিনের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়, ফলে মেলানিন জমে গাঢ় দাগ বা পিগমেন্টেশন সৃষ্টি করে। ডিট্যান ফেশিয়ালের মূল লক্ষ্যই হল এই ধরনের কালচে দাগ— যেমন ট্যান ও পিগমেন্টেশন— হালকা বা দূর করা। এতে ত্বকের কালো অংশ হালকা হয়, বলিরেখাও কমে আসে, ফলে মুখ আরও উজ্জ্বল দেখায়। সাধারণত, ট্যান দূর করতে ব্যবহৃত হয় ভিটামিন সি, প্রাকৃতিক ফলের অ্যাসিড এবং পাতিলেবুর নির্যাসের মতো উপাদান। এই ফেশিয়ালের মূল উদ্দেশ্য হল ত্বককে গভীরভাবে ক্লিনজ ও স্ক্রাব করা এবং একই সঙ্গে ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখা।
ব্রাইটনিং ফেশিয়াল
ব্রাইটনিং ফেশিয়ালের উদ্দেশ্য হল ত্বককে উজ্জ্বল করে তোলা এবং দাগছোপ কমানো। এই ধরনের ফেশিয়াল ত্বকের কালচে ভাব, অসমান রঙের সমস্যা দূর করে ত্বকের স্বাভাবিক উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনতে সহায়ক। এতে ব্যবহৃত অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট উপাদান ত্বককে পুনরুজ্জীবিত করতে সাহায্য করে। এক্সফোলিয়েশন বা স্ক্রাবিংয়ের মাধ্যমে মৃত কোষ ঝরে গিয়ে ত্বক হয় আরও উজ্জ্বল ও মসৃণ। ফেশিয়ালের সময় করা মাসাজ রক্তসঞ্চালন বাড়িয়ে ত্বককে প্রাণবন্ত করে তোলে। বর্তমানে অক্সিজেন ফেশিয়াল এবং এলইডি লাইট থেরাপির মতো আধুনিক পদ্ধতিগুলো বেশ জনপ্রিয়। অক্সিজেন ফেশিয়াল ত্বককে হাইড্রেট করে এবং ক্ষতিগ্রস্ত কোষগুলোর পুনর্জন্মে সাহায্য করে। এতে ব্যবহৃত ভিটামিন ও ত্বক-উপযোগী উপাদান ত্বকে উজ্জ্বলতা এনে দেয়। নিয়মিত মাসাজ এবং অক্সিজেন থেরাপি বলিরেখা কমাতে ও ব্রণের দাগ হালকা করতেও কার্যকর।
সূর্যের তাপ বা সৈকতে বেড়ানোর ফলে ত্বকে ট্যান পড়লে, ডি-ট্যান ফেশিয়াল উপকারি হতে পারে। এক-দু’বারের ডি-ট্যান ফেশিয়ালের পর ত্বক পরিষ্কার হলে, এরপর ব্রাইটনিং ফেশিয়াল করালে ভালো ফল পাওয়া যায়। তবে মনে রাখা জরুরি—একবার ফেশিয়াল করলেই ত্বকের সব সমস্যা মিটে যাবে, এমনটা নয়। অনেক সময় একাধিকবার ফেশিয়াল করতে হয় এবং ফল পেতে সময়ও লাগে। তাই শুধু ফেশিয়াল নয়, এর পাশাপাশি ত্বকের নিয়মিত যত্নও অত্যন্ত প্রয়োজন।