
নয়াদিল্লি, ৩০ জুলাই, ২০২৫ – ভারতের আয়কর বিভাগ করদাতাদের সুবিধার জন্য অ্যাসেসমেন্ট ইয়ার ২০২৫-২৬ (অর্থবর্ষ ২০২৪-২৫) এর জন্য ITR-3 ফর্মটি অনলাইন দাখিলের ব্যবস্থা চালু করেছে। এর ফলে, ব্যবসা বা পেশা থেকে আয় উপার্জনকারী ব্যক্তি এবং হিন্দু অবিভক্ত পরিবার (HUF) এখন খুব সহজেই আয়কর ই-ফাইলিং পোর্টালে তাদের রিটার্ন জমা দিতে পারবেন।
ITR-3 ফর্মটি মূলত সেই সব ব্যক্তি এবং হিন্দু অবিভক্ত পরিবারগুলির (HUF) জন্য প্রযোজ্য যাদের আয় ব্যবসা বা পেশা থেকে আসে। এছাড়াও, নিম্নলিখিত আয়ের উৎসযুক্ত ব্যক্তিরাও এই ফর্ম ব্যবহার করতে পারবেন:
- শেয়ার ট্রেডিং থেকে আয়, যার মধ্যে ফিউচারস এবং অপশনস (F&O) ট্রেডিং অন্তর্ভুক্ত।
- তালিকাভুক্ত নয় এমন শেয়ারে বিনিয়োগ থেকে আয়।
- কোম্পানি পরিচালক।
- পার্টনারশিপ ফার্মের পার্টনার হিসেবে প্রাপ্ত আয়।
- মূলধনী লাভ (capital gains) বা বিদেশি সম্পদ থেকে আয়।
- বেতন, পেনশন বা গৃহ সম্পত্তি থেকে আয়, যদি সেই ব্যক্তির ব্যবসা বা পেশা থেকে আয়ও থাকে।
গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনসমূহ:
এই বছর ITR-3 ফর্মে বেশ কিছু নতুন পরিবর্তন আনা হয়েছে, যা করদাতাদের জন্য জানা জরুরি:
- নতুন কর ব্যবস্থা (New Tax Regime): ITR-3 ফর্মে করদাতাদের ফর্ম 10-IEA দাখিলের মাধ্যমে নতুন কর ব্যবস্থা বেছে নেওয়ার বা তা থেকে বেরিয়ে আসার জন্য একটি নির্দিষ্ট বিকল্প দেওয়া হয়েছে।
- মূলধনী লাভের প্রতিবেদন (Capital Gains Reporting): অর্থ আইন, ২০২৪-এর পরিবর্তনের ফলে মূলধনী লাভের প্রতিবেদনের পদ্ধতি সংশোধন করা হয়েছে। করদাতাদের এখন ২৩শে জুলাই, ২০২৪ এর আগে এবং পরে সংঘটিত লেনদেনগুলোর জন্য মূলধনী লাভ পৃথকভাবে রিপোর্ট করতে হবে।
- সম্পদ ও দায় সংক্রান্ত তথ্য (Assets and Liabilities Disclosure): যেসব করদাতার মোট আয় এখন ₹৫০ লক্ষের পরিবর্তে ₹১ কোটির বেশি, তাদের আর্থিক বছরের শেষে তাদের সম্পদ ও দায় সংক্রান্ত তথ্য বিস্তারিতভাবে জানাতে হবে।
- বিবিধ পরিবর্তন: ফর্মটিতে আরও কিছু পরিবর্তন অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যেমন ডিভিডেন্ড আয়ের বিস্তারিত বিবরণ, শেয়ার বাইব্যাকে মূলধনী ক্ষতির সুনির্দিষ্টভাবে রিপোর্ট করা, এবং সেকশন 44BBC এর অধীনেクルーズ অপারেশনের আয়ের বিষয়ে নতুন বিধান যুক্ত করা হয়েছে।
অনলাইনে ITR-3 দাখিলের প্রক্রিয়া:
করদাতারা আয়কর বিভাগের ই-ফাইলিং পোর্টালে (www.incometax.gov.in) লগইন করে ITR-3 ফর্ম অনলাইনে দাখিল করতে পারেন। অনলাইন মোডে, ফর্মটি ধাপে ধাপে পূরণ করতে হবে এবং এর সাথে সম্পর্কিত তথ্য যেমন আয়, ছাড়, ডিডাকশন এবং ট্যাক্স পেমেন্ট সংক্রান্ত বিবরণ সঠিকভাবে পূরণ করতে হবে। ফর্মটি সফলভাবে দাখিল করার জন্য ইলেকট্রনিক ভেরিফিকেশন কোড (EVC) বা আধার OTP এর মাধ্যমে যাচাই করা বাধ্যতামূলক।
আয়কর বিভাগ জানিয়েছে যে, যেসব করদাতাদের জন্য অ্যাকাউন্টের নিরীক্ষা (audit) বাধ্যতামূলক, তাদের ITR দাখিলের আগে একটি ডিজিটাল স্বাক্ষর ব্যবহার করে ইলেকট্রনিকভাবে রিপোর্ট দাখিল করতে হবে।
এই পদক্ষেপ করদাতাদের জন্য রিটার্ন দাখিলের প্রক্রিয়াকে আরও সহজ ও স্বচ্ছ করবে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে, যেহেতু শেষ তারিখ দ্রুত এগিয়ে আসছে, তাই কর বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ হলো করদাতারা যেন দ্রুত তাদের রিটার্ন দাখিল করে।