
নয়াদিল্লি, ১৮ আগস্ট — ভারতের অভ্যন্তরীণ চাহিদা, ব্যক্তিগত আয়করের ছাড়, মুদ্রানীতির শিথিলতা এবং চাকরির বাজারে ইতিবাচক পরিবর্তনের ফলে আগামী কয়েক ত্রৈমাসিকে ভোক্তা ব্যয় ও অর্থনৈতিক চাহিদা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়বে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ সংস্থা মর্গ্যান স্ট্যানলি। সংস্থার ১৭ আগস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কেন্দ্র সরকারের প্রস্তাবিত জিএসটি সংস্কার এই প্রবণতাকে আরও জোরদার করবে।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী স্বাধীনতা দিবসের ভাষণে ঘোষণা করেন, দীপাবলির আগে “নেক্সট-জেন” জিএসটি সংস্কার চালু করা হবে, যা ক্ষুদ্র ব্যবসা, MSME এবং সাধারণ ভোক্তাদের উপকৃত করবে। এর পরেই অর্থ মন্ত্রক একটি সরলীকৃত দুই-স্তরের জিএসটি কাঠামোর প্রস্তাব দেয়, যার ভিত্তি তিনটি স্তম্ভ—গঠনমূলক সংস্কার, হার যৌক্তিকীকরণ এবং জীবনযাত্রার সহজতা।
বর্তমান ১২% ও ২৮% জিএসটি হার বাতিল করে ৫% ও ১৮% হার রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রায় ৯৯% পণ্য ১২% থেকে ৫%-এ এবং ৯০% পণ্য ২৮% থেকে ১৮%-এ স্থানান্তরের পরিকল্পনা রয়েছে। এই প্রস্তাব সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে জিএসটি কাউন্সিলের বৈঠকে বিবেচিত হবে।
মর্গ্যান স্ট্যানলির বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, এই সংস্কার বার্ষিক জিডিপির ০.৫–০.৬% পর্যন্ত প্রভাব ফেলতে পারে। পরোক্ষ কর হ্রাসের গুণিতক ১.১, যার ফলে ৫০–৭০ বেসিস পয়েন্ট পর্যন্ত জিডিপি বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া CPI মুদ্রাস্ফীতিতে ৪০ বেসিস পয়েন্ট হ্রাস এবং রাজস্ব ঘাটতির কিছুটা ভারসাম্য বজায় রাখতে উচ্চতর জিডিপি বৃদ্ধির মাধ্যমে কর সংগ্রহ বাড়তে পারে।
সংস্থাটি সতর্ক করে বলেছে, নতুন হার কার্যকর হওয়ার আগে কিছু ভোক্তা ব্যয় স্থগিত হতে পারে, তবে পরবর্তীতে চাহিদা পুনরুদ্ধার হবে এবং ক্রয়ক্ষমতা বাড়বে। বিশেষ করে নিম্ন আয়ের পরিবারগুলির জন্য পরোক্ষ কর হ্রাস একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হবে।
এই সংস্কার ভারতের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, রাজস্ব ভারসাম্য এবং মুদ্রানীতির ভবিষ্যৎ দিকনির্দেশে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছে মর্গ্যান স্ট্যানলি।