August 27, 2025
2 (1)

চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত প্রায় ৫৭৮ কোটি টাকার পরিকাঠামো উন্নয়নে কাজ করেছে সরকার। উন্নয়নকে এই সরকার অন্যতম অগ্রাধিকার দিয়েছে। তবে এখনো সরকারকে কালিমালিপ্ত করতে চেষ্টা করছে অনেকে। কিন্তু সবকিছুতে একটা সীমা (লিমিট) থাকে। সীমার বাইরে চলে গেলে যা করার করবে সরকার। কোন অবস্থায় বরদাস্ত করা হবে না। আজ উনকোটি জেলার কুমারঘাটের গীতাঞ্জলি অডিটোরিয়ামে একাধিক উন্নয়নমূলক প্রকল্পের ভার্চুয়াল উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা। এদিন এই জায়গা থেকে ভার্চুয়ালি ১০টি প্রকল্পের উদ্বোধন ও ৫টি প্রকল্পের শিলান্যাস করেন মুখ্যমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ সাহা বলেন, আমাদের সরকার আসার পর কর্মচারীদের ডিএ’র পরিমাণ বৃদ্ধি করেছে। এজন্য কাউকে বলতে হয়নি। আমরা সাধ্যমতো ডিএ দেওয়ার চেষ্টা করছি। আমাদের গোমতী ও ধলাই – এই দুটো জেলায় এত সুন্দর কাজ হয়েছে, যার দরুণ দুটো জেলা পুরস্কৃত হয়েছে। কারণ কাজের কোন বিকল্প নেই। কেন্দ্রীয় অর্থায়নে রাজ্যের কুমারঘাট, ধর্মনগর ও উদয়পুর রেল স্টেশন আধুনিকীকরণ করা হচ্ছে। যদিও এই কাজে বিলম্ব হচ্ছে বলে বিধায়ক আমাকে বলেছেন। এনিয়ে আমি কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলবো। রাজ্যের পূর্বতন সরকারগুলি যেভাবে কাজ করেছে আমরা সেভাবে করতে চাই না। আমরা চাই মানুষের সার্বিক কল্যাণে আরো কাজ করার। আগে আমরা দেখেছি শুধু দুর্নীতি আর দুর্নীতি। ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নরেন্দ্র মোদি দায়িত্ব গ্রহণের পর দেশ ক্রমশ সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। দেশকে শক্তিশালী করছেন তিনি। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধেও কঠোর অবস্থান নিয়েছেন। অপারেশন সিঁদুরের মাধ্যমে সন্ত্রাসবাদীদের যোগ্য জবাব দিয়েছেন তিনি। নিখুঁত নিশানায় ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে জঙ্গিদের ৯টি ঘাঁটি। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের রাজ্যকেও শক্তিশালী করছেন প্রধানমন্ত্রী। আইন শৃঙ্খলা ব্যবস্থার দিক থেকে দেশের ২৮টি রাজ্যের মধ্যে এখন তৃতীয় স্থানে রয়েছে ত্রিপুরা।

রাজ্যে আইন শৃঙ্খলা ঠিক থাকলে ও সুস্থিতি থাকলে উন্নয়ন হবে। প্রতিনিয়ত উন্নয়ন হচ্ছে এখানে। স্বাস্থ্য ক্ষেত্র, কৃষি ক্ষেত্র, ক্রীড়া ক্ষেত্র সহ সবদিক দিয়ে উন্নত হচ্ছে রাজ্য। এই সরকারের উপর মানুষের সমর্থন আছে বলেই এটা সম্ভব হচ্ছে। ডাঃ সাহা বলেন, আমার মনে হয় না ভারতীয় জনতা পার্টির সরকারকে এখান থেকে কেউ সরাতে পারবে না। রাজনীতির পরিভাষা পাল্টে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। কিছুদিন আগে দিল্লিতে এনএলএফটি ও এটিটিএফ এর সঙ্গে চুক্তি হয়েছে। তারা অস্ত্রসমর্পন করেছে। এখন বলা যায় ত্রিপুরা সন্ত্রাসবাদ মুক্ত একটা রাজ্য। আজ ত্রিপুরা উন্নতি করছে। বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী আরো বলেন, চালাকি ও চতুরতার মাধ্যমে রাজনীতির দিন গেছে। কারণ এতদিন সেটা অভ্যেস হয়ে গিয়েছিল। আমরা চাই সবাইকে নিয়ে চলতে। কিন্তু কেউ যদি না চলতে চায় তবে কিছু করার নেই। গায়ের জোরে রাজনীতি চলবে না। কোন অবস্থায় সেটা মানা যাবে না। সরলতার সুযোগে যে যা খুশি বলবে সেটা মানা যাবে না। তাই যেখানে যা করা দরকার সেটা কঠোরভাবে করা হবে। ডাঃ সাহা বলেন, সম্প্রতি বিহারের উপ মুখ্যমন্ত্রীর আমন্ত্রণে বিহার যাই। সেখানে গিয়ে ডেন্টাল কলেজে যাই। তাঁরা আমাকে খুবই সম্মান দিয়েছেন। আমি বলেছি আমরা ত্রিপুরায় ৭ মাসের মধ্যে ডেন্টাল কলেজ স্থাপন করেছি। যার আসন সংখ্যা এখন ৬৩। ত্রিপুরায় মাথাপিছু আয় ও জিএসটির দিক দিয়ে এখন উত্তর পূর্বাঞ্চলের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ স্থানে রয়েছে। আমরা সবাই মিলে পরিশ্রম করছি বলে সেটা সম্ভব হয়েছে। এর পাশাপাশি রাজ্যে সফলভাবে এনইসি প্ল্যানারী আয়োজন করার বিষয়টি উত্থাপন করেন মুখ্যমন্ত্রী।

অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা চাই এখানে একটা সুষ্ঠু পরিবেশ বিরাজ করুক। আর সুষ্ঠু পরিবেশে মানুষ বাঁচুক। ঘোলা জলে কেউ যাতে মাছ না ধরে। রাজ্যে এখন উন্নয়ন হচ্ছে। কৈলাশহরে এয়ারপোর্ট শুরু হচ্ছে। কমলপুর ও খোয়াই এয়ারপোর্টকেও কিভাবে কাজে লাগানো যায় সেটা চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী জানান, রাজ্যে বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য বন্যা প্রবণ এলাকা চিহ্নিত করতে বলা হয়েছে। গত জানুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত পরিকাঠামো উন্নয়নে প্রায় ৫৭৮ কোটি টাকার কাজ হয়েছে। তথ্য দিয়ে তিনি জানান, গত ২০ জানুয়ারি সিপাহীজলা জেলায় ১২২ কোটি টাকা বরাদ্দে মাদক নিরাময় কেন্দ্রের ভূমিপুজন হয়েছে। ১৭ জানুয়ারি বিলোনিয়া মহকুমা হাসপাতালের নতুন ভবন, নিহারনগর প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র করা হয়েছে। ১২ ফেব্রুয়ারি পশ্চিম জেলায় জিরানিয়ায় ৬টি উন্নয়নমূলক প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছে। ডাঃ সাহা বলেন, এআই প্রযুক্তির মাধ্যমে রাজ্যে আরো উন্নয়নের প্রক্রিয়া চলছে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রী সান্তনা চাকমা, বিধায়ক ভগবান দাস, জেলাশাসক তমাল মজুমদার সহ অন্যান্য পদস্থ আধিকারিকগণ। এদিন বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে গীতাঞ্জলি অডিটোরিয়াম চত্বরে গাছের চারা রোপণ করেন মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ সাহা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *