
কানাডার গবেষকদের এক যুগান্তকারী গবেষণায় দেখা গেছে, মাল্টিপল স্ক্লেরোসিস (MS) রোগের লক্ষণ প্রকটভাবে প্রকাশ পাওয়ার আগেই রোগটি শরীরে সক্রিয় হতে পারে। গবেষণাটি সম্প্রতি JAMA Network Open-এ প্রকাশিত হয়েছে এবং এতে বলা হয়েছে, রোগের সনাক্তযোগ্য নিউরোলজিক্যাল উপসর্গ দেখা দেওয়ার অন্তত ১৫ বছর আগে থেকেই রোগীরা বিভিন্ন অস্পষ্ট শারীরিক ও মানসিক সমস্যার জন্য চিকিৎসা গ্রহণ শুরু করেন।
গবেষণায় ১২,০০০-এরও বেশি ব্রিটিশ কলম্বিয়ার বাসিন্দার স্বাস্থ্য রেকর্ড বিশ্লেষণ করা হয়েছে। এতে দেখা গেছে, MS রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিরা ক্লান্তি, মাথাব্যথা, ব্যথা, মাথা ঘোরা, দৃষ্টিশক্তির সমস্যা এবং উদ্বেগ ও বিষণ্নতার মতো মানসিক সমস্যার জন্য চিকিৎসকের কাছে যান রোগ সনাক্ত হওয়ার বহু বছর আগে থেকেই।
গবেষণার মূল পর্যবেক্ষণ:
- ১৫ বছর আগে: সাধারণ চিকিৎসকদের কাছে ক্লান্তি, ব্যথা ও মানসিক সমস্যার জন্য চিকিৎসা গ্রহণের হার বৃদ্ধি।
- ১২ বছর আগে: মনোরোগ বিশেষজ্ঞের কাছে পরামর্শ গ্রহণের হার বৃদ্ধি।
- ৮–৯ বছর আগে: চোখের ব্যথা ও ঝাপসা দেখার মতো সমস্যার জন্য নিউরোলজিস্ট ও চক্ষু বিশেষজ্ঞের কাছে যাতায়াত বৃদ্ধি।
- ৩–৫ বছর আগে: জরুরি বিভাগ ও রেডিওলজির চিকিৎসা গ্রহণের হার বৃদ্ধি।
- ১ বছর আগে: নিউরোলজি, জরুরি বিভাগ ও রেডিওলজির মতো একাধিক বিশেষজ্ঞের কাছে চিকিৎসা গ্রহণের হার সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছায়।
গবেষকরা বলছেন, এই দীর্ঘ “প্রড্রোমাল” পর্যায়—যেখানে রোগ শরীরে সক্রিয় থাকলেও তা স্পষ্টভাবে প্রকাশ পায় না—MS রোগের সনাক্তকরণ ও চিকিৎসার ক্ষেত্রে একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে পারে। যদিও এই সাধারণ উপসর্গগুলো থাকা মানেই MS হবে এমন নয়, তবুও এই পর্যায়কে চিহ্নিত করতে পারলে রোগ নির্ণয় দ্রুততর করা সম্ভব এবং রোগীর দীর্ঘমেয়াদি ফলাফল উন্নত হতে পারে।
এই গবেষণা MS রোগের ইতিহাস ও বিকাশ সম্পর্কে প্রচলিত ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করেছে এবং আগাম সনাক্তকরণ ও হস্তক্ষেপের সম্ভাবনা বাড়িয়েছে।