
গোলাঘাট, ১৮ আগস্ট — আসাম-নাগাল্যান্ড সীমান্তবর্তী উরিয়ামঘাটে চলমান উচ্ছেদ অভিযানের সময় নাগা মহিলারা অস্থায়ীভাবে অভিযান থামিয়ে দেন, তাঁদের জমির দাবিকে কেন্দ্র করে প্রশাসনের সঙ্গে সরাসরি মুখোমুখি হন। ঘটনাটি ঘটে রেংমা রিজার্ভ ফরেস্ট এলাকায়, যেখানে দ্বিতীয় দফার উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়েছে।
সোমবার সকাল ১০টা থেকে কৃষ্ণপুর ও হালধিবাড়ি অঞ্চলে একযোগে উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়। শতাধিক এক্সকাভেটর, পুলিশ ও আধাসামরিক বাহিনী মোতায়েন করা হয়। তবে অভিযানের মাঝপথে কয়েকজন নাগা মহিলা প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের ঘিরে ধরে দাবি তোলেন যে উচ্ছেদকৃত জমি তাঁদের পূর্বপুরুষদের সম্পত্তি।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা যায়, মহিলারা বলেন, “এই জমি আমাদের, বহিরাগতরা দখল করেছিল। এখন উচ্ছেদ হয়েছে, আমরা আমাদের জমি ফেরত চাই।” তাঁদের বক্তব্যে উঠে আসে দীর্ঘদিন ধরে জমি হারানোর ক্ষোভ এবং প্রশাসনের প্রতি অনাস্থা।
আসাম সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, উচ্ছেদ অভিযান সম্পূর্ণ আইনানুগভাবে পরিচালিত হচ্ছে এবং দখলদারদের আগেই নোটিশ দেওয়া হয়েছে। বিশেষ মুখ্য সচিব এম. কে. যাদব জানান, “আমরা ৪০০ বিঘারও বেশি বনভূমি পুনরুদ্ধার করেছি। উরিয়ামঘাটে বৃক্ষরোপণ অভিযানও শুরু হবে।”
তবে উচ্ছেদ-পরবর্তী পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠছে। উচ্ছেদকৃত এলাকায় নাগা বাসিন্দাদের জমি দাবি এবং উপস্থিতি নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে। স্থানীয় অসমিয়া পরিবারগুলি আশঙ্কা প্রকাশ করেছে, এই জমিগুলি আবারও দখল হয়ে যেতে পারে।
NSCN (Niki Sumi) গোষ্ঠী এই উচ্ছেদকে “নাগা পূর্বপুরুষদের জমি দখলের পরিকল্পিত পদক্ষেপ” বলে অভিহিত করেছে। তারা অভিযোগ করেছে, আসাম সরকার “অবৈধ বাংলাদেশি অভিবাসীদের” বসতি স্থাপন করে নাগা জমি দখলের চেষ্টা করছে।
রাইজোর দল নেতা অখিল গগৈও এই উচ্ছেদকে “ধর্মভিত্তিক” বলে সমালোচনা করেছেন এবং বলেছেন, “অসমিয়া পরিবার উচ্ছেদ হয়েছে, এখন নাগা গোষ্ঠী সেই জমি দখল করছে।”
এই পরিস্থিতি আসাম-নাগাল্যান্ড সীমান্তে পুরনো জমি বিরোধ এবং জাতিগত উত্তেজনাকে নতুন করে উসকে দিয়েছে। প্রশাসনের সামনে এখন বড় চ্যালেঞ্জ—উচ্ছেদ কার্যক্রমের পাশাপাশি শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখা।