
অসমের তিনসুকিয়া জেলার ডিমুলি চা-বাগানে অ্যাম্বুলেন্স না পাওয়ায় এক গর্ভবতী মহিলার মর্মান্তিক মৃত্যু ঘিরে তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়েছে। শনিবার রাতে এই ঘটনায় বাগান শ্রমিকদের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে এবং শতাধিক মানুষ বাগান কারখানার সামনে বিক্ষোভে সামিল হন।
মৃত মহিলার নাম ভারতী টান্তি (৩০), যিনি ডিমুলি চা-বাগানের পালাং লাইনের বাসিন্দা এবং দুই সন্তানের মা। প্রসববেদনা শুরু হলে তিনি বাড়িতেই একটি মৃত শিশুর জন্ম দেন। শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে তাঁর পরিবার বাগান হাসপাতাল থেকে অ্যাম্বুলেন্স চায়। কিন্তু তৎকালীন সময়ে ওয়েল ইন্ডিয়া লিমিটেডের অ্যাম্বুলেন্সটি অকেজো ছিল এবং রাজ্য সরকারের অ্যাম্বুলেন্সটি অন্য রোগী নিয়ে বেরিয়ে গিয়েছিল।
পরিবার বাধ্য হয়ে দীর্ঘ অপেক্ষার পর একটি ব্যক্তিগত গাড়ির ব্যবস্থা করে ভারতীকে ডুমডুমা সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু পথেই তাঁর মৃত্যু হয়।
এই ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়তেই বাগান শ্রমিকরা মৃতা মা ও মৃত শিশুর দেহ নিয়ে কারখানার সামনে বিক্ষোভ দেখান। তাঁদের অভিযোগ, বাগান কর্তৃপক্ষের গাফিলতির কারণেই এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে। ডিমুলি চা-বাগানে নিজস্ব কোনো অ্যাম্বুলেন্স নেই এবং সরকারি অ্যাম্বুলেন্সও পর্যাপ্ত নয় বলে অভিযোগ।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এর আগেও একই কারণে মাতৃমৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এক মাস আগে অল অসম টি ট্রাইবস স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের (ATTSA) বাঘজান-ডিঘলতারাং শাখা বাগান কর্তৃপক্ষকে অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা চালুর দাবিতে স্মারকলিপি দিয়েছিল, কিন্তু কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে আলোচনার আশ্বাস দিলে বিক্ষোভকারীরা ছত্রভঙ্গ হন। এদিকে অল অসম চা শ্রমিক সংঘ (ACMS)-এর ডিমুলি ইউনিট বাগান ম্যানেজারের কাছে স্মারকলিপি দিয়ে শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করার অভিযোগ তোলে এবং দাবি পূরণ না হলে বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেয়।
এই ঘটনায় চা-বাগান এলাকায় স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর দুর্বলতা ও শ্রমিকদের প্রতি অবহেলার চিত্র ফের একবার সামনে এল।