June 27, 2025
29

মহারাষ্ট্রে স্কুল শিক্ষায় হিন্দি ভাষাকে তৃতীয় ভাষা হিসেবে বাধ্যতামূলক করার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে একযোগে প্রতিবাদে নামছেন উদ্ধব ঠাকরেরাজ ঠাকরে। দুই ভাইয়ের এই বিরল ঐক্য রাজ্যের ভাষাগত ও সাংস্কৃতিক রাজনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।

মহারাষ্ট্র সরকার সম্প্রতি ঘোষণা করেছে, ২০২৫–২৬ শিক্ষাবর্ষ থেকে রাজ্যের ইংরেজি মাধ্যম স্কুলগুলিতে প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত হিন্দি ভাষা বাধ্যতামূলক করা হবে। এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে উদ্ধব ঠাকরের নেতৃত্বাধীন শিবসেনা (ইউবিটি) এবং রাজ ঠাকরের মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনা (এমএনএস) পৃথকভাবে প্রতিবাদ কর্মসূচির ঘোষণা করেছে।

উদ্ধব ঠাকরে এই সিদ্ধান্তকে “ভাষাগত জরুরি অবস্থা” বলে আখ্যা দিয়ে বলেন, “আমরা হিন্দির বিরোধিতা করছি না, কিন্তু মহারাষ্ট্রে জোর করে হিন্দি চাপিয়ে দেওয়ার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াব।” তিনি ৭ জুলাই মুম্বাইয়ের আজাদ ময়দানে এক বিশাল প্রতিবাদ মিছিলে অংশ নেবেন বলে জানিয়েছেন।

রাজ ঠাকরে ৬ জুলাই এমএনএস-এর পক্ষ থেকে প্রতিবাদ কর্মসূচির ডাক দিয়েছেন। তিনি বলেন, “এই আন্দোলন কোনও রাজনৈতিক দলের নয়, এটি মারাঠি ভাষা ও সংস্কৃতির অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই।” তিনি আরও জানান, এই কর্মসূচিতে কোনও রাজনৈতিক পতাকা থাকবে না এবং সমস্ত দল ও নাগরিকদের অংশগ্রহণের আহ্বান জানানো হয়েছে।

রাজনৈতিক তাৎপর্য

দীর্ঘদিনের বিরোধ ভুলে দুই ঠাকরে ভাইয়ের এই সমন্বয় মহারাষ্ট্রের রাজনীতিতে তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। রাজ ঠাকরে এক পডকাস্টে বলেন, “আমাদের ব্যক্তিগত বিরোধের চেয়ে মারাঠি সংস্কৃতি ও মহারাষ্ট্রের স্বার্থ অনেক বড়।” উদ্ধবও এক সভায় বলেন, “মহারাষ্ট্রের স্বার্থে আমি সব বিরোধ ভুলে একসঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত”।

বিজেপি নেতৃত্বাধীন রাজ্য সরকার দাবি করেছে, এই সিদ্ধান্ত জাতীয় শিক্ষানীতির (NEP 2020) আওতায় নেওয়া হয়েছে। তবে প্রবল বিরোধিতার মুখে সরকার ইতিমধ্যেই ইঙ্গিত দিয়েছে যে হিন্দিকে ঐচ্ছিক করা হতে পারে।

এই ভাষা বিতর্ক মহারাষ্ট্রে আঞ্চলিক পরিচয়, সাংস্কৃতিক স্বাতন্ত্র্য ও রাজনৈতিক সমীকরণকে কেন্দ্র করে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে। রাজ ও উদ্ধবের সম্ভাব্য ঐক্য শুধু ভাষা আন্দোলন নয়, আগামী নির্বাচনে মহারাষ্ট্রের রাজনৈতিক মানচিত্রেও বড় প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *