
ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা এবং জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির প্রভাবে শুক্রবার ভারতীয় শেয়ারবাজারে বড় ধরনের পতন হয়েছে। ৩০ শেয়ারের বিএসই সেনসেক্স ১,৩৩৭.৩৯ পয়েন্ট বা ১.৬৩ শতাংশ কমে ৮০,৩৫৪.৫৯-এ দাঁড়িয়েছে। একইভাবে, ৫০ শেয়ারের এনএসই নিফটি ৪১৫.২ পয়েন্ট বা ১.৬৬ শতাংশ কমে ২৪,৪৭৩-এ নেমে এসেছে।
এই পতনের মূল কারণ হিসেবে ইরানের উপর ইসরায়েলের সম্ভাব্য আক্রমণের খবরকে দায়ী করা হচ্ছে। এই সংঘাতের আশঙ্কায় বিশ্বব্যাপী তেলের মানদণ্ড ব্রেন্ট অপরিশোধিত তেলের দাম ৯.৩৩ শতাংশ বেড়ে ৭৫.৮৩ মার্কিন ডলারে দাঁড়িয়েছে, যা বাজারের উদ্বেগকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। জিওজিৎ ইনভেস্টমেন্টস লিমিটেডের প্রধান বিনিয়োগ কৌশলবিদ ভিকে বিজয়কুমার বলেছেন, “ইরানের আক্রমণ এবং পাল্টা আক্রমণ দীর্ঘস্থায়ী হলে এই ইসরায়েলি হামলার অর্থনৈতিক পরিণতি গভীর হতে পারে। ব্রেন্ট অপরিশোধিত তেলের দাম প্রায় ১২% বেড়ে ৭৮ ডলারে দাঁড়িয়েছে। বাজারের উপর প্রভাব নির্ভর করবে সংঘাত কতক্ষণ স্থায়ী হবে তার উপর। অদূর ভবিষ্যতে বাজার ঝুঁকিমুক্ত অবস্থায় থাকবে।”
সেনসেক্সের ৩০টি কোম্পানির শেয়ারের দামই এদিন নিম্নমুখী ছিল। এর মধ্যে কোটাক মাহিন্দ্রা ব্যাংক, পাওয়ার গ্রিড, আদানি পোর্টস, টাটা মোটরস, আল্ট্রাটেক সিমেন্ট এবং এশিয়ান পেইন্টস প্রধান দরপতনের শিকার হয়েছে।
এদিকে, বৃহস্পতিবার আহমেদাবাদে লন্ডনগামী এয়ার ইন্ডিয়ার একটি বিমান দুর্ঘটনার খবরও বিনিয়োগকারীদের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। উড্ডয়নের কয়েক মিনিটের মধ্যেই বিমানটি বিধ্বস্ত হয় এবং এয়ার ইন্ডিয়া ২৪১ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে, যদিও একজন যাত্রী অলৌকিকভাবে বেঁচে গেছেন।
অ্যাক্সিস সিকিউরিটিজের গবেষণা প্রধান অক্ষয় চিনচলকার বলেন, “মধ্যপ্রাচ্যে ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ার লক্ষণ দেখা দেওয়ায় গতকাল নিফটি এক শতাংশেরও বেশি পড়ে গেছে। আজ সকাল থেকে, ইসরায়েল ইরানের উপর পূর্ব-আক্রমণাত্মক হামলা চালিয়েছে এবং এর ফলে বাজারে ব্যাপক ঝুঁকির সৃষ্টি হয়েছে।”
এশিয়ার অন্যান্য বাজারগুলিতেও একই চিত্র দেখা গেছে। দক্ষিণ কোরিয়ার কোস্পি, জাপানের নিক্কেই ২২৫ সূচক, সাংহাইয়ের এসএসই কম্পোজিট সূচক এবং হংকংয়ের হ্যাং সেং নিম্নমুখী লেনদেন করেছে। যদিও বৃহস্পতিবার মার্কিন বাজারগুলি ইতিবাচক অঞ্চলে শেষ হয়েছিল।
এক্সচেঞ্জের তথ্য অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার বিদেশী প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা (FII) ৩,৮৩১.৪২ কোটি টাকার ইক্যুইটি অফলোড করেছে, যা বাজারের নিম্নমুখী প্রবণতাকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।