November 21, 2024

উপকরণের দাম বেড়েছে তবুও খোলা বাজারে প্যাকেটজাত মোমবাতির দাম বাড়ে নি। এই পরিস্থিতিতে দীপাবলীর উৎসবের মুখে রীতিমতো ঝাঁ চকচকে টুনি বাল্বকে টেক্কা দিচ্ছে মালদার তৈরি বিভিন্ন ধরনের মোমবাতি। ইংরেজবাজার শহরের বিনয় সরকার রোড সংলগ্ন হায়দারপুর এলাকায় রয়েছে সাহা মোমবাতি কারখানা। যেখানে আজকের দিনেও অন্তত ২০ থেকে ২৫ জন মহিলারা রকমারি মোমবাতির তৈরি করে স্বনির্ভর হয়েছেন। আর এই মোমবাতির তৈরীর ক্ষেত্রে পথ দেখিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কারখানার কর্ণধার রতন সাহা। তাঁর বক্তব্য, বিভিন্ন বাজারে আধুনিক টুনি বাল্ব, চাইনিজ লাইটের রমরমা বেচাকেনা চলছে।

তবুও প্রাচীন ঐতিজ্য মেনে আজও দীপাবলীর উৎসবে মানুষ ঘরে ঘরে মোমবাতি জ্বালিয়ে থাকেন। এমনকি লোকসভা নির্বাচন এবং বন্যাতেও বিপুল পরিমাণ মোমবাতির প্রয়োজন হয়েছিল। ফলে উৎপাদনে ঘাটতি মেটাতেই এখন রাতদিন এক করে কাজ করা হচ্ছে। তাই এই কুটির শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে প্রশাসনের সহযোগিতার অত্যন্ত দরকার। ইংরেজবাজার শহরের হায়দারপুর এলাকায় রতন সাহার কারখানায় এখন রাতদিন এক করেই চলছে মোমবাতি তৈরির কাজ। রথ যাত্রার আগে থেকেই বিভিন্ন ধরনের মোমবাতি তৈরির কাজ শুরু করে দেওয়া হয় বলে জানা গিয়েছে। যদিও এবারে মালদার বিভিন্ন এলাকায় বন্যা ও লোকসভা নির্বাচনের ক্ষেত্রে বিপুল পরিমাণ মোমবাতির প্রয়োজন পড়েছিল। ফলে নতুন করে আবার এই কারখানাতেই জোর গতিতে চলছে রংবেরঙের মোমবাতি তৈরির কাজ। মোমবাতি তৈরীর কারিগরেরেরা বলেন, ১০ টাকার প্যাকেট থেকে শুরু করে ৫০ ও ৬০ টাকার প্যাকেট পর্যন্ত মোমবাতি রয়েছে।

সাদা এবং বিভিন্ন রংবেরঙের মোমবাতি তৈরি করা হয়। কিন্তু প্রতিবছরই মোমবাতি তৈরীর উপকরণের দাম বাড়ছে। সেই তুলনায় প্যাকেটের দাম দিতে চাইছে না পাইকারেরা। তবুও সামান্য লাভ রেখেই এই কাজ করতে হচ্ছে। আধুনিক যুগে বহু ধরনের টুনি বাল্ব বাজারে এসেছে। প্রতিটি বাড়িতেই এখন টুনির ছড়াছড়ি। কিন্তু দীপাবলীর উৎসবে মোমবাতি জ্বালানোর প্রচলনকে এখনো দাবিয়ে রাখতে পারে নি আধুনিক যুগের এই টুনি বাল্ব। তবে এই ধরনের কুটির শিল্পকে টিকিয়ে রাখার ক্ষেত্রে প্রশাসনের সহযোগিতার দরকার রয়েছে। হায়দারপুর এলাকার মোমবাতি কারখানার কর্ণধার রতন সাহা বলেন, মূলত বৈশাখ মাস থেকেই মোমবাতি তৈরির কাজ শুরু হয়ে যায়। কম বেশি গোটা বছরই এই কাজ চলে।

মালদার বাইরে ঝাড়খণ্ড, বিহার ও বিভিন্ন জেলাতেও এখান থেকে মোমবাতি রপ্তানি করা হয়। এক টন মোম কিনতে গেলেই খরচ পরে ১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা। প্রায় ১৫ থেকে ১৬ লক্ষ টাকা ব্যয় করেই বছরের অন্তত আট মাস মোমবাতি তৈরির কাজ চলে। বিভিন্ন ধরনের সস্তায় মোমবাতিও আজকের দিনে তৈরি করা হচ্ছে। কিন্তু আধুনিক যুগের টুনি বাল্ব ঘরে ঘরে জ্বললেও মোমবাতির প্রচলনকে বন্ধ করতে পারে নি। রতনবাবু আরো বলেন, আমার কারখানায় অন্তত ২০ থেকে ২৫ জন মহিলারা কাজ করেন সাবলম্বী হয়েছে। প্রাথমিকভাবে আমার এই কারখানায় বিনামূল্যে মহিলাদের প্রশিক্ষণ দিয়ে কাজ শেখানোর ব্যবস্থা করি। পরে কাজের দক্ষতা অনুযায়ী সকলকেই পারিশ্রমিক দেওয়া হয়। আমরা চাই রাজ্য সরকার এই ধরনের কুটির শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিক। তাহলে বহু মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলি আগামীতে মোমবাতি শিল্পের উপর ভর করে স্বাবলম্বী হতে পারবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *