
ট্রাম ফিরিয়ে আনার দাবিতে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল একটি নাগরিক সংগঠন। তারই পরিপ্রেক্ষিতে উচ্চআদালত বিভিন্ন জটিলতা কাটিয়ে ট্রাম চালানোর ব্যবস্থা কি ভাবে করা যায়, তা খতিয়ে দেখতে পুলিশ, কলকাতা পুরসভা, রাজ্য পরিবহণ নিগম-সহ বিভিন্ন পক্ষের প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি কমিটি গড়ে দিয়েছিল। কিন্তু সেই মামলা চলার মধ্যেই রাজ্য সরকার জানিয়েছে যে তারা শহরে ট্রাম চালাতে বিশেষ আগ্রহী নয়। মামলাকারী সংগঠনটির অভিযোগ, চালু রুটগুলি থেকেও ট্রাম তুলে দিতে সরকার যে শুধু ‘তৎপর’ হয়ে উঠেছে তা-ই নয়, আদালতের গড়ে দেওয়া কমিটির সুপারিশও তারা উপেক্ষা করেছে। এমনকি, ট্রাম যাতে না চলতে পারে, তার জন্য কালীঘাট, ভবানীপুর, জাজেস কোর্ট ও খিদিরপুরে ট্রামলাইন ঢেকে দেওয়া হয়েছে পিচ দিয়ে।
শহরের অন্যতম চালু ট্রামের রুট ছিল টালিগঞ্জ থেকে বালিগঞ্জ। গত আগস্টে ওই পথের মোড় সংলগ্ন অংশে জলের পাইপলাইন মেরামতির কথা বলে ২০ দিন ট্রাম পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়েছিল। এর মধ্যে তিনটি ট্রামকে বালিগঞ্জ স্টেশন সংলগ্ন জায়গায় অরক্ষিত অবস্থায় ফেলে রাখা হয় বলে অভিযোগ। অথচ, পাইপলাইন মেরামতি শেষ হলেও পুজোর সময়ে ওই পথে ট্রামের পরিষেবা শুরু করা হয়নি। সম্প্রতি ওই অংশে ট্রামলাইন মেরামতির কাজ সম্পূর্ণ করে পুরসভা। কিন্তু তার পরেও পরিষেবা স্তব্ধ রয়েছে টালিগঞ্জ থেকে বালিগঞ্জ পর্যন্ত পথে।
রাজ্য পরিবহণ নিগম কর্তৃপক্ষের যুক্তি, লাইনের মেরামতি যথাযথ ভাবে না হওয়ার কারনে ট্রাম চলাচল সুরক্ষিত নয়। একই ভাবে, এসপ্লানেড-খিদিরপুর রুটেও ট্রাম চলাচল শুরু করা নিয়ে একাধিক বার আলোচনা হলেও কোন সদর্থক পদক্ষেপ করেনি রাজ্য প্রশাসন— এমনই অভিযোগ করা হচ্ছে। রাজ্য প্রশানের একটি সূত্র জানাচ্ছে, ট্রাম চলাচল করছে না এমন রুটে দুর্ঘটনা এড়াতে পুলিশ এবং পুরসভার সঙ্গে কথা বলে ট্রামলাইন পিচ দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছে। ‘কলকাতা ট্রাম ইউজ়ার্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর সভাপতি দেবাশিস ভট্টাচার্যের মতে, রাজ্য প্রশাসন আদালতের সিদ্ধান্তের অপেক্ষা না করে জোর করে ট্রাম তুলে দেওয়ার চেষ্টা করছে, যা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক।