June 19, 2025
2

পরিবেশ রক্ষায় বৃক্ষরোপণ একটা গণ আন্দোলন হওয়া প্রয়োজন। বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্য রক্ষায় বৃক্ষরোপণ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। গতবছর রাজ্যে ৫ মিনিটে ৫ লক্ষ বৃক্ষরোপণ করার বিষয়টি দিল্লিতে খুবই প্রশংসিত হয়েছিল। সব প্যারামিটারে ত্রিপুরা এখন ভারতবর্ষের মানচিত্রে একটা উজ্জ্বল স্থানে চলে এসেছে। আজ আগরতলার মহারাণী তুলসীবতি বালিকা বিদ্যালয়ে ‘এক পেড় মা কি নাম ২.০’ কার্যক্রম উপলক্ষে আয়োজিত বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা। বিদ্যালয় শিক্ষা দপ্তরের উদ্যোগে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ সাহা বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এক পেড় মা কি নাম এর মতো হৃদয়স্পর্শী ও প্রতীকী কার্যক্রম শুরু করেছেন। এক্ষেত্রে পরিবেশ সুরক্ষা ও মাতৃশক্তিকে একসূত্রে গাঁথার প্রয়াস নিয়েছেন তিনি। রাজ্যেও এই কার্যক্রম শুরু হয়েছে। আর এটা শুধু গাছ লাগানো নয়, আমাদের সবার জীবনে মায়েদের অবদানকে সম্মান ও কৃতজ্ঞতা জানানোর একটা অনন্য উপায়। এভাবে দেশবাসীর সামনে একটা মানবিক ও পরিবেশ বান্ধব দৃষ্টান্ত রাখার মহৎ উদ্যোগ নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। মা শুধু একটা সম্পর্ক নয় – একটা অনুভব, নিঃস্বার্থ ভালোবাসা, অদম্য আত্মত্যাগের নাম।

মা আমাদের যেভাবে রক্ষা করেন, লালন পালন করেন সেভাবে গাছও পরিবেশকে রক্ষা করে। গাছ আমাদের অক্সিজেন দেয়, ছায়া দেয় এবং প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা করে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ২০২৩ সালে এক পেড় মা কি নাম প্রথম কার্যক্রম শুরু হয়। এতে ত্রিপুরায় ১,৪২,৬০০ এর অধিক চারাগাছ রোপণ করা হয়। যেখানে ১,১৬,৫০০ জন ছাত্রছাত্রী অংশগ্রহণ করেছিল। আর মায়েরাও এই কার্যক্রমে অংশ নিয়েছিলেন। এবার কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রক আমাদের প্রায় সাড়ে তিন লক্ষের মতো চারাগাছ রোপণের লক্ষ্যমাত্রা দিয়েছে। ওয়ান স্টুডেন্ট ওয়ান ট্রি – এই শ্লোগানকে সামনে রেখে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি কার্যকর করতে হবে। রাজ্যের ৮টি জেলায় একযোগে এই অভিযান শুরু হয়েছে। প্রায় ৩,৬৫২টি স্কুল একযোগে এই কর্মসূচিতে সামিল হয়েছে। এতে ২,৯২,৪০০ এর অধিক ছাত্রছাত্রী অংশ নিয়েছে। ৯০,০৪৪ জন মাও এই কর্মসূচিতে যোগদান করেছেন। ১,৫৬,২০০ এর অধিক চারাগাছ ত্রিপুরায় রোপণ করা হচ্ছে। আমাদের অবশ্যই প্রকৃতিকে ভালোবাসতে হবে। মায়ের মতোই একটা গাছকে শ্রদ্ধা করা ও ভালোবাসতে হবে।

এই কার্যক্রমে মুখ্যমন্ত্রী আরো বলেন, প্রকৃতি, বন, জীবন ও সভ্যতা একে অপরের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। গাছ ও বনের প্রয়োজনীয়তা একটা চিরন্তন সত্য। পরিবেশকে রক্ষা ও ঝুঁকি কমাতে হলে বৃক্ষরোপণ একটা গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম। একটা পরিণত গাছ গড়ে ২৬০ পাউন্ড অক্সিজেন সরবরাহ করে। আর ৪৮ পাউন্ড কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করতে পারে। পশুপাখি কিংবা মানুষ অক্সিজেন ছাড়া বাঁচতে পারে না। কপ – ২৬ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন যে ২০৭০ সালে দেশের কার্বন নির্গমণকে শূন্যতে নামিয়ে আনার। ডাঃ সাহা বলেন, রাজ্যে বনভূমির পরিমাণ ৭,৪২২ বর্গ কিলোমিটার। যা রাজ্যের ভৌগোলিক আয়তনের ৭৩.৩৪%। বন দপ্তরের উদ্যোগে রাজ্যে ২০২২ সালের ৮ জুন ৫ মিনিটে ১,০২,২৩০টি চারাগাছ রোপণ করা হয়। ২৩ সালের ১৬ জুন ৫ মিনিটে ২,০৭,৮০০ এর অধিক চারাগাছ রোপণ করা হয়। আর ২৪ সালের ৫ জুলাই ৫ মিনিটে ৫ লক্ষ চারাগাছ রোপণ করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা দপ্তরের বিশেষ সচিব রাভেল হেমেন্দ্র কুমার, শিক্ষা অধিকর্তা এন সি শর্মা, এসসিইআরটির ডিরেক্টর এল ডার্লং সহ শিক্ষক শিক্ষিকা ও অন্যান্য পদস্থ আধিকারিকগণ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *