
রাজ্যসভার সাংসদ কামাখ্যা প্রসাদ তাসার একটি বিতর্কিত মন্তব্যে দেশজুড়ে আদিবাসী ছাত্র ও যুব মহলে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। সম্প্রতি এক জনসভায় সাংসদ তাসা মন্তব্য করেন যে, যারা খ্রিস্টান ধর্ম গ্রহণ করেছেন, তারা তফসিলি উপজাতি (Scheduled Tribe – ST) হিসেবে সংরক্ষণের সুবিধা পাওয়ার যোগ্য নন। তার এই মন্তব্যের প্রতিবাদে বিভিন্ন আদিবাসী ছাত্র সংগঠন তীব্র নিন্দা জানিয়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি শুরু করেছে।
সাংসদ তাসা তার বক্তব্যে বলেন, “খ্রিস্টান ধর্ম গ্রহণ করার পর আদিবাসীদের জীবনযাত্রা ও সংস্কৃতির পরিবর্তন ঘটে। তারা তাদের ঐতিহ্যবাহী রীতিনীতি থেকে সরে আসে। তাই তাদের আর আদিবাসী হিসেবে গণ্য করা উচিত নয় এবং তারা এসটি স্ট্যাটাসের সুবিধা পাওয়ার যোগ্য নন।” এই মন্তব্যটি মূলত ‘ডি-লিস্টিং’ আন্দোলনের প্রতিধ্বনি, যেখানে দাবি করা হয় যে যারা ধর্ম পরিবর্তন করেছেন তাদের তফসিলি উপজাতির তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হোক।
সাংসদের এই মন্তব্যের পর থেকেই বিভিন্ন আদিবাসী সংগঠন, বিশেষত আদিবাসী ছাত্র সংস্থা (Adivasi Students’ Association), কঠোর প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। তারা সাংসদ তাসার কুশপুত্তলিকা দাহ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছে এবং তার মন্তব্যকে “অসাংবিধানিক ও বিভেদমূলক” বলে অভিহিত করেছে।
আদিবাসী ছাত্র সংস্থার পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে যে, সংবিধানের ৩৪২ ধারা অনুযায়ী, একজন ব্যক্তির উপজাতি পরিচয় তার ধর্মীয় বিশ্বাসের উপর নির্ভরশীল নয়। আদিবাসী হওয়া একটি জন্মগত পরিচয়, যা তার নিজস্ব সংস্কৃতি, ভাষা এবং ঐতিহ্য দ্বারা সংজ্ঞায়িত হয়। ধর্ম পরিবর্তন একজন ব্যক্তির উপজাতি পরিচয়কে মুছে ফেলতে পারে না। সংগঠনটি আরও দাবি করেছে যে, সাংসদ তাসা এমন মন্তব্য করে আদিবাসী সমাজে বিভেদ সৃষ্টির চেষ্টা করছেন, যা তাদের সাংবিধানিক অধিকারের উপর সরাসরি আঘাত।
সংগঠনটি আরও বলেছে, এই ধরনের মন্তব্য আদিবাসী সমাজকে বিভক্ত করার এবং তাদের মধ্যে ধর্মীয় বিভেদ সৃষ্টির একটি রাজনৈতিক কৌশল। তারা সরকারকে এই বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার এবং সাংসদ তাসার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে।