
নয়াদিল্লি, ১৮ জুলাই — মধ্যবয়স্ক প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে গ্যাস্ট্রোইনটেস্টিনাল (GI) ক্যান্সারের হার বিশ্বজুড়ে উদ্বেগজনকভাবে বাড়ছে বলে জানিয়েছে দুটি পৃথক গবেষণা। জার্নাল অফ দ্য আমেরিকান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (JAMA) এবং ব্রিটিশ জার্নাল অফ সার্জারি-তে প্রকাশিত এই গবেষণাগুলি ৫০ বছরের কম বয়সীদের মধ্যে ক্যান্সারের প্রবণতা নিয়ে বিস্তারিত বিশ্লেষণ করেছে।
প্রথম গবেষণায় দেখা গেছে, কোলোরেক্টাল ক্যান্সার এখনও সবচেয়ে সাধারণ early-onset GI ক্যান্সার হলেও, এর পাশাপাশি প্যানক্রিয়াটিক, গ্যাস্ট্রিক এবং ইসোফ্যাজিয়াল ক্যান্সারের হারও তরুণদের মধ্যে বাড়ছে। গবেষণার প্রধান লেখক ড. কিমি এনগ (Dana-Farber Cancer Institute) বলেন, “এই বৃদ্ধির হার অত্যন্ত উদ্বেগজনক এবং প্রতিরোধমূলক কৌশল ও প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্তকরণের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে।”
দ্বিতীয় গবেষণায় দেখা গেছে, ২০১০ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে early-onset GI ক্যান্সারের নতুন শনাক্তকৃত কেস ১৪.৮% বৃদ্ধি পেয়েছে। ৪০–৪৯ বছর বয়সীদের মধ্যে কেসের সংখ্যা সর্বাধিক হলেও, ১৯৯০ সালে জন্মগ্রহণকারীরা ১৯৫০ সালের তুলনায় দ্বিগুণ হারে কোলন ক্যান্সার এবং চারগুণ হারে রেকটাল ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রাখে।
গবেষণাগুলি চিহ্নিত করেছে বেশ কয়েকটি পরিবর্তনযোগ্য জীবনধারার ঝুঁকি, যার মধ্যে রয়েছে:
- স্থূলতা
- অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস
- অলস জীবনযাপন
- ধূমপান ও মদ্যপান
এছাড়া জেনেটিক পরীক্ষা এবং প্রাথমিক স্ক্রিনিং-এর গুরুত্বও তুলে ধরা হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলেন, প্রতিটি মিসড স্ক্রিনিং একটি হারানো সুযোগ—যা ক্যান্সারকে প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত করে চিকিৎসা সহজ করতে পারত, অথবা প্রিক্যান্সারাস পলিপ সরিয়ে ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে পারত।
Dana-Farber-এর ড. থেজাস জয়কৃষ্ণন বলেন, “স্ক্রিনিংয়ে অনিয়ম মানেই জীবন রক্ষার সুযোগ হারানো।” গবেষণাগুলি আরও জানায়, early-onset GI ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীরা প্রায়শই বেশি আগ্রাসী চিকিৎসা পান, কিন্তু তাদের বেঁচে থাকার হার অনেক সময় বড়দের তুলনায় কম।
এই গবেষণাগুলি GI ক্যান্সারের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী সচেতনতা বৃদ্ধির আহ্বান জানিয়েছে, বিশেষ করে তরুণ প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে। গবেষকরা বলছেন, এই প্রবণতা বুঝতে আরও গবেষণা জরুরি, যাতে প্রতিরোধ, নির্ণয় এবং চিকিৎসার কৌশল আরও কার্যকরভাবে গড়ে তোলা যায়।